ঢাকা : ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলায় আহত ইসরায়েলি ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে দেশটির একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন ইসরায়েলের একজন মন্ত্রী। কিন্তু স্থানীয় জনগণের বিক্ষোভের কারণে হাসপাতালের প্রবেশমুখ থেকেই ফিরে যান তিনি।
আরেকজন মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কফি ছোড়া হয়। ওই মন্ত্রীর শরীরে না লাগলেও কফি গিয়ে পড়ে তাঁর দেহরক্ষীর ওপর। এছাড়া আরেক মন্ত্রী হামাসের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে দেখা করতে গেলে ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘মূর্খ’মন্তব্য ও স্লোগান শুনে আসতে হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে এসব ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে ইসরায়েলের মন্ত্রীরা। হামাস ওই দিন ইসরায়েলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায়। এর পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এতে করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে হামাস কীভাবে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালাল এবং ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি ইসরায়েলিকে হত্যা করল তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ ইসরায়েলের মানুষ। এ ক্ষোভের অনেকটা গিয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তাঁর সরকারের ওপর।
[209216]
হামাসের হামলার পরপরই দলটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক কঠোর যুদ্ধের ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলার শিকার হয়েছে ইসরায়েল। বলা চলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জীবনে এটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, তাতে সন্দেহ নেই।
জনরোষের মুখে হামাসের হামলাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি উল্লেখ করে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন নেতানিয়াহু। গাজায় অব্যাহত এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বাদ যাচ্ছে না হাসপাতালও। এরপরও জনগণের ক্ষোভ কমাতে পারছেন না তিনি।
জেরুজালেমের শ্যালোম হার্টম্যান ইনস্টিটিউটের ফেলো অ্যামোতজ এসা-এল বলেন, এখন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর প্রভাবশালী রক্ষণশীল লিকুদ পার্টির ভাগ্যেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ‘তিনি (নেতানিয়াহু) বিদায় নেবেন। সেই সঙ্গে তাঁর পুরো সরকার কাঠামোকে বিদায় নিতে হবে।’
ইসরায়েলের হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র ‘ম্যারিভ’ একটি জনমত জরিপ চালিয়েছে। এতে দেখা গেছে, হামাসের হামলার পর ২১ শতাংশ ইসরায়েলি নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান। ৬৬ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী পদে ‘অন্য কাউকে’ চান। আর ১৩ শতাংশ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
তাই এখন যদি ইসরায়েলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টি এক-তৃতীয়াংশ আসন হারাবে। এর সুবিধা পেতে পারেন নেতানিয়াহুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যপন্থী ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির নেতা বেনি গান্তজ। দলটি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তবে ইসরায়েলিরা এখন নির্বাচন চান না। তাঁরা চান উদ্যোগ ও পাল্টা পদক্ষেপ। বিশেষ করে হামাসের হাতে জিম্মি শ দুয়েক ইসরায়েলির মুক্তি চান তাঁরা। সূত্র: রয়টার্স।
এমটিআই