বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার মূল কারণ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপির জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এসব জঙ্গি আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে।
কিন্তু কাবুলের দাবি, টিটিপি সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা; আফগানিস্তানের সীমান্তে হামলার দায় তাদের নয়।
ইসলামাবাদভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) নাসির জান বলেন, ‘তালেবান সরকার টিটিপিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলে সীমান্তে সংঘাত আরও বাড়বে। পাকিস্তান এখন প্রতিরক্ষামূলক নয়, প্রতিশোধমূলক কৌশল নিচ্ছে।’
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশেই এখন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের সংকট চলছে। দুই পক্ষই একে অপরকে ‘সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই সীমান্ত সংঘাত কেবল সামরিক নয়—এটি দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাসঘাটির প্রতিফলন। যতদিন না টিটিপি ইস্যুতে পারস্পরিক সমাধান আসে, ততদিন কুররম, বাজাউর, চিত্রালের মতো সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে রক্তক্ষয় থামবে না।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে আবারও ভয়াবহ সংঘাত হয়েছে। পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররম সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় ১২ জনেরও বেশি আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে আফগান তালেবানের মুখপাত্র এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর রয়টার্স।
সংঘাতের সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার বিকেলে। পাকিস্তানের জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগান সেনাবাহিনী ও পাকিস্তানের নিষিদ্ধ গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) যৌথভাবে কুররম সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীকে লক্ষ্য করে ‘বিনা উসকানিতে’ হামলা চালায়।
এর জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তানের দাবি, সংঘাতে আফগান সেনাদের চারটি সীমান্ত পোস্ট ও ছয়টি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়েছে।
জিও নিউজের বরাতে জানা যায়, সংঘাত শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানি বাহিনী আফগানিস্তানের খোস্ট প্রদেশের শামশাদ ও নার্গসার সেনাপোস্ট ধ্বংস করে। এরপর তুর্কমানজাই ও পোলসেন পোস্টেও হামলা চালানো হয়। পোলসেন পোস্টের কাছে থাকা এক জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানি সেনারা।
সূত্র: রয়টার্স, জিও নিউজ, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এসএইচ