ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম শুরু করে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি, দমকা বাতাস ও জলোচ্ছ্বাস। উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ওড়িশা রাজ্যের ১৫টি জেলাতেও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কোনাসীমা জেলার মাকানাগুদেম গ্রামে এক নারী নিহত হয়েছেন—প্রবল বাতাসে একটি তালগাছ ভেঙে পড়ে তার ওপর।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমি এবং ১ লাখ ৩৮ হাজার হেক্টর উদ্যান ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ৭৬ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ২১৯টি মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। গবাদিপশুর জন্য মজুত রাখা হয়েছে ৮৬৫ টন খাদ্যসামগ্রী।
ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতায় অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর জন্য রেড এলার্ট জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। সমুদ্রে প্রায় এক মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তনম, কাকিনাডা, নেল্লোর ও কোনাসীমা জেলায় এখনো ভারি বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস অব্যাহত রয়েছে।
উপ্পাদা–কাকিনাডা উপকূলীয় সড়কে উঁচু ঢেউয়ের কারণে রাস্তাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কাকিনাডা বন্দরে জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর বিপৎসংকেত, যা সর্বোচ্চ সতর্কতা। এছাড়া বিশাখাপত্তনম, গাঙ্গাভারাম ও কালিঙ্গপত্তনম বন্দরে ৯ নম্বর, এবং মাচিলিপত্তনমসহ আরও কয়েকটি বন্দরে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত জারি রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি রয়ে গেছে। তাই জনগণকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এম