নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মানুষদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ছিল আশ্রয়ের অন্যতম গন্তব্য। কিন্তু এবার সেই সুযোগ প্রায় শেষের পথে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৬ অর্থবছরে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন মাত্র ৭ হাজার ৫০০ জন—যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন কোটা।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় এক প্রেসিডেন্সিয়াল নথি প্রকাশ করা হয়, যেখানে এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যদিও নথিটি প্রস্তুত করা হয়েছিল ৩০ সেপ্টেম্বর।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী গ্রহণ কর্মসূচি প্রায় স্থবির হয়ে পড়বে। তুলনামূলকভাবে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে শেষ অর্থবছরে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পেয়েছিলেন।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, সীমিত এই কোটা থেকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানার্স সম্প্রদায়ের মানুষদের। ট্রাম্প দাবি করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের হাতে এই শ্বেতাঙ্গরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।
১৯৮০ সালে মার্কিন কংগ্রেস পাস করেছিল শরণার্থী আইন, যার মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে নিপীড়িত মানুষ বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ পান। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করেছেন।
কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প এ আইনটির প্রভাব সীমিত করার উদ্যোগ নেন। নানা আইনি চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি শেষ পর্যন্ত আশ্রয় প্রক্রিয়ার পরিধি ব্যাপকভাবে সংকুচিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই সিদ্ধান্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী নয়, বরং বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানুষের জন্য এক ‘অমানবিক বার্তা’। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এম