ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেও নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বুধবারের এই ধারাবাহিক আঘাতে অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৭৭ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কাতারভিত্তিক আল–জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় তিনটি পৃথক স্থানে বোমাবর্ষণ করা হয়। একই সঙ্গে গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া ও জয়তুন এলাকাতেও দুটি ভবনে হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলাই ব্যাপক প্রাণহানির কারণ বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, “একটি ভবনে একই পরিবারের বাবা-মা ও তিন শিশুসহ সবাই নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকলেও গাজার ওপর চাপ এবং আতঙ্ক কোনোভাবেই কমেনি।”
হামলার পর আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানায়, বুধবার যেসব স্থানে আঘাত করা হয়েছে, সবই হামাসের সামরিক লক্ষ্যবস্তু। তাদের দাবি, এসব হামলা যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেনি, বরং চুক্তির আওতায় থাকা “হামাসকে নিরস্ত্র করার” ধারার ভিত্তিতেই এ অভিযান চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “খান ইউনিস ও গাজা সিটিতে হামাসের সঙ্গে সম্পর্কিত পাঁচটি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজন হলে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ইসরায়েলের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইডিএফ হামলাকে বৈধতা দিতে ‘ভুয়া ব্যাখ্যা’ দিচ্ছে। তাদের ভাষায়, “এই হামলা স্পষ্টভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন। নেতানিয়াহুর সরকার আবারও গণহত্যা চালানোর উদ্দেশ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় উভয় পক্ষ সম্মতি দেওয়ার পর ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। আল-জাজিরার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী মোট ৩৯৩ বার যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে।
গাজা উপত্যকায় এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। স্থানীয়দের ভাষায়, “যুদ্ধ শেষ হয়নি, শুধু নামটাই বদলেছে।” সূত্র: আল–জাজিরা
এম