সাম্প্রতিক সময়ে দেশে জমির নামজারি (মিউটেশন) আবেদন বিপুল হারে বাতিল হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। বেশির ভাগ আবেদনকারী মনে করেন, সব নিয়ম মেনে আবেদন করেছেন—কিন্তু বাস্তবে ছোট ছোট তথ্যগত ভুলই নামজারি বাতিলের বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯টি কারণেই সবচেয়ে বেশি নামজারি আবেদন রিজেক্ট হচ্ছে—
১️. দলিলের চৌহদিতে ভুল
জমির চারপাশের সীমানা (উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমে কার জমি আছে) যদি ভুল বা অসম্পূর্ণ হয়, তাহলে নামজারি অনুমোদন পায় না। দলিল তৈরির সময় সীমানা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২️. দাগ নম্বরে ত্রুটি
ভুল দাগ নম্বর লেখা থাকলে আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়। সঠিক দাগ নিশ্চিত না হলে বিক্রেতার সহায়তায় ভুল সংশোধন দলিল করতে হবে অথবা আদালতের মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে।
৩️. খতিয়ান সংক্রান্ত ভুল
খতিয়ান নম্বর, মৌজা বা জেলার নাম ভুল থাকলে আবেদন গৃহীত হয় না। রেজিস্ট্রেশনের সময় এই তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করতে হবে।
৪️. মালিকানার ধারাবাহিকতায় অসংগতি
গত ২৫ বছরের মালিকানার ধারাবাহিক বিবরণীতে কোনো ভুল থাকলে নামজারি বাতিল হয়। এই অংশে একটি শব্দের ভুলও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৫️. ভোটার আইডির তথ্যের সঙ্গে অমিল
দলিলের নাম, জন্মতারিখ বা ঠিকানা যদি ভোটার আইডির সঙ্গে না মেলে, তবে আবেদন রিজেক্ট হয়। দলিলের আগে সব তথ্য হুবহু যাচাই করা জরুরি।
৬️. অর্পিত সম্পত্তি
যে জমি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত, সেখানে নামজারি করা যায় না। কেনার আগে স্থানীয় ভূমি অফিসে যাচাই করা বাধ্যতামূলক।
৭️. খাস জমি কেনা
খাস জমি সাধারণত ভূমিহীনদের বরাদ্দ থাকে। কেউ এ জমি কিনলে তার নামজারি বাতিল হয় এবং ভবিষ্যতেও বৈধ মালিকানা দাবি করা যায় না।
৮️. আগে থেকেই নামজারি হওয়া জমি
একই দাগ বা খতিয়ানে যদি আগেই অন্য কারও নামে নামজারি হয়ে থাকে, নতুন আবেদন বাতিল হবে। যৌথ মালিকানার জমিতে এ ধরনের জটিলতা বেশি দেখা যায়।
৯️. আগেই বিক্রিত জমি পুনরায় বিক্রি
অনেকে পারিবারিক সদস্যদের নামে দলিল করার পর একই জমি অন্যের কাছে বিক্রি করেন। এমন ক্ষেত্রে প্রথম মালিকানাই বৈধ থাকে, ফলে নতুন ক্রেতার আবেদন বাতিল হয়।
এম