রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত দেশের প্রভাবশালী দুই সংবাদমাধ্যম—দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার–এর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজিত জনতা প্রথমে প্রথম আলো কার্যালয়ে এবং পরে পাশের ডেইলি স্টার ভবনে হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাতের দিকে কয়েকশ বিক্ষোভকারী কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে অবস্থিত প্রথম আলো কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। তারা ভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন তলায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে সেগুলো ভবনের সামনে জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীরা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা পর্যন্ত উঠে তাণ্ডব চালায়। একই সময়ে পাশের ডেইলি স্টার সেন্টারেও হামলা হয়। সেখানে ভবনের কাচ ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ও নথিপত্র বের করে এনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আগুনের লেলিহান শিখা ও ঘন ধোঁয়ায় কারওয়ান বাজার এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হামলার সময় ভবনের ভেতরে থাকা সাংবাদিক ও কর্মচারীদের অনেকেই ছাদে কিংবা নিরাপদ কক্ষে আশ্রয় নেন।
এ ঘটনায় ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আহমেদ দিপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “এমন লেট নাইট ডিউটি যেন কারও জীবনে না আসে। ছাদে আটকা পড়েছি, ভবনে আগুন দিয়েছে—দেখা নাও হতে পারে।” পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। একই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এলাকায় মোতায়েন করা হয়।
বর্তমানে কারওয়ান বাজার ও আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এম