ছুটি বাড়ছে না, ৬ মে সব খোলা!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২, ২০২০, ১০:৩৯ এএম

ঢাকা: করোনা মোকাবেলার জন্য গত ২৬শে মার্চ থেকে সরকার যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল তা দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। ৫ মে পর্যন্ত সর্বশেষ পঞ্চম দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, এই ছুটি শেষ হওয়ার পর কি হবে? নতুন করে কি ছুটি দেয়া হবে নাকি লক ডাউন বা সাধারণ ছুটি তুলে নিয়ে স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য শুরু হবে? এখন পর্যন্ত সরকার এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে আগামী রবিবার এই নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ারকথা রয়েছে।

এই বৈঠকে সশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের যোগ দিতে বলা হয়েছে। সম্মিলিতভাবে তাঁরা এই ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হবে নাকি আস্তে আস্তে সীমিত আকারে কাজকর্ম শুরু হবে সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পরে এই সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণের কথা। প্রধানমন্ত্রীই পরবর্তীতে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।

তবে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্যে সরকার কিছুদিনের জন্য হলেও কিছুদিনের জন্য ছুটি বাড়াতে চাচ্ছে না। বরং ছুটি না বাড়িয়ে কিছু কিছু কর্মচাঞ্চল্যের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরিয়ে আনতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাপারে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ এবং সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, সামনে ঈদ এবং ঈদের সময় যদি সবকিছু বন্ধ রাখা হলে অর্থনীতির উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একারণেই ঈদকে সামনে রেখে স্বল্প দিনের জন্য সীমিত আকারে আর শর্ত সাপেক্ষে কিছু কিছু অফিস-কারখানা খুলে দেয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এরকম একজন উর্ধ্বতন চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, ছুটি হয়তো থাকবে না, কিন্তু কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে ধাপে ধাপে সরকার স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্যে ফেরার প্রক্রিয়া নিতে চায়। আর এক্ষেত্রে সরকার যেসব নির্দেশনা দিবে, তাঁর মধ্যে থাকতে পারে-

১. সামাজিক, রাজনৈতিকসহ সকল ধরণের গণজমায়েত বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত। যেমন এই রোযার মাঝেই কোন রকম বিধিনিষেধ না থাকলে ইফতার বা সেহেরী পার্টি করতে পারে অনেকে, ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান ইত্যাদি নানারকম সামাজিক সমাবেশ করতে পারে অনেকে। অনেকে আবার রাজনৈতিক সমাবেশের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন  এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ডাকতে পারেন। সেগুলো যেন না হয়, সামাজিক দুরত্ব ক্ষতিগ্রস্ত এমন কোন ধরণের পাবলিক গ্যাদারিং বা জনসমাগম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। যদি ছুটি শেষও হয়, তাহলে এটা হবে সরকারের প্রধান নজরদারির বিষয়।

২. দোকানপাট খোলা থাকলেও সেখানে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে কেনাকাটা করে, সে ব্যাপারে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করবে। গণপরিবহন চালু করার ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। কারণ ছুটি শেষ হলে যে শ্রমজীবী, কর্মজীবী মানুষগুলো ঢাকার বাইরে চলে গিয়েছিল তাঁদেরকে ঢাকায় নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে গণপরিবহন চালুর বিকল্প নেই। বরং গণপরিবহন চালু করতে গেলে তা সীমিত আকারে চালু করা হবে এবং সেখানেও যেন সামাজিক দুরত্বটা বজায় রাখা হয়- সেটা নিশ্চিত করা হবে। ঈদ এবং অর্থনীতিকে চালু রাখার জন্য লকারখানাগুলোকে যে ধাপে ধাপে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে সরকারি নীতিনির্ধারক মহল থেকে আভাস পাওয়া গেছে। সেখানে কারখানাগুলোকে আগে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং এরপরেই কারখানাগুলো খোলা হবে।

তবে এই ছুটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদে জামায়াতে নামায পড়াসহ আরো কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ অব্যহত রাখা হবে বলে জানা গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় কমিটি এবং টেকনিক্যাল কমিটি- দুটো কমিটিই এই ব্যাপারে কাজ করছে। তাঁরা যে সুপারিশ দিবে সেই সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

সোনালীনিউজ/এইচএন