শেখ কামালের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী

কামাল থাকলে সমাজকে অনেক কিছু দিতে পারতো

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২০, ০৪:৩১ পিএম

ঢাকা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ ৫ জুলাই। এ উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে নানা আয়োজন করা হয়েছে।

শেখ কামাল স্মরণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজ কামাল যদি বেঁচে থাকতো, সমাজকে অনেক কিছু দিতে পারতো।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে শেখ কামালের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যোগ দেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় তিনি বলেন, শেখ কামালের যে বহুমুখী প্রতিভা ছিল তা বিকশিত হয়ে সব অঙ্গনে ভূমিকা রাখতে পারতো। সে সেটা রেখেও গেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তার সে ভূমিকা আছে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে প্রতিটি আন্দোলনে সে বড় ভূমিকা রেখেছে।

শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যোগ দিয়ে এ আয়োজনের শুরুতে শেখ কামালের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন। কামাল আজ আমাদের মাঝে নেই। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাবা, মা, ভাই, আত্মীয়-পরিজনসহ ঘাতকের নির্মম আঘাতে সে শাহাদাত বরণ করেছে। এই আগস্ট শোকের মাস। এই মাসেই তার জন্মদিন।

ছোট ভাই সম্পর্কে শেখ হাসিনা আরও বলেন, কামাল আমার থেকে দুই বছরের ছোট। তার মেধা বহুমুখী ছিল। একদিকে যেমন ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক জগতেও তার প্রতিভা ছিল। সে অভিনয় করতো, গান গাইতো, সেতার বাজাতো। খেলাধুলায় তার সবচেয়ে বড় অবদান। ধানমন্ডিতে কোনও খেলাধুলার ব্যবস্থা ছিল না। এক্ষেত্রে সে-ই উদ্যোগ নেয়।

শেখ কামাল ছিলেন দূরদর্শী ও গভীর চিন্তাবোধের অধিকারী

ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন–প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি ও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সভায় সভাপতিত্ব করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

এক তারুণ্যের অনির্বাণ শিখা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল : স্বাধীন বাংলাদেশের কাণ্ডারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ।

১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ক্ষণজন্মা সাহসী যোদ্ধা, নতুন প্রজন্মের  তারুণ্যোদ্দীপ্ত অনির্বাণ শিখা শহীদ শেখ কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবনের নিচতলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শেখ কামাল। সেদিন ওই বাড়িতে থাকা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। আর সেই পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের প্রথম শহীদ বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল।

শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী  উপলক্ষে বুধবার (৫ আগস্ট) সীমিত আকারে আয়োজিত  নানা কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।

দেশের ঐতিহ্যবাহি ক্রীড়া সংগঠন আবাহনী ক্রীড়া চক্রও তাদের প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

শেখ কামাল আমাদের মধ্যে চিরঞ্জীব-চিরভাস্বর হয়ে আছেন

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধানমণ্ডিতে আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া হবে। সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিল হবে।

আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য শেখ কামাল ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ও গড়ে তুলেছিলেন।

শেখ কামালের জন্মদিনে ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর সব স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

শিক্ষাঙ্গণের মেধাবী মুখ, সফল ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন।

ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন শেখ কামাল। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যও ছিলেন তিনি।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ কামাল।

স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।

আধুনিক ক্রীড়াঙ্গনের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ কামাল

১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে শেখ কামালের বিয়ে হয়। ১৫ আগাস্ট সস্ত্রীক শত্রুর বর্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বাঙালি তারুণ্যের চিরঞ্জীব শিখা শহীদ শেখ কামাল।

শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে ‘তারুণ্যের জেগে উঠার নাম শেখ কামাল' শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনার আয়োজন করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন-সিআরআই।

সুভাষ সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক হারুন-উর-রশিদ, সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক অঘোর মণ্ডল এবং আবাহনীর প্রথম অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার পাভেল রহমান।

ওয়েবিনারটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই