ভারতে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি তরুণী, ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ পুলিশের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২১, ০৪:৪৯ পিএম
ফাইল ফটো

ঢাকা: বাংলাদেশি এক তরুণীকে ভারতে নির্যাতনের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর বাড়ি ঢাকার হাতিরঝিলে। আর নির্যাতনকারীদের একজনের বাড়ি মগবাজার এলাকায়। নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালায়। ওই তরুণী ও অভিযুক্তরা সবাই এখনও ভারতে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, ২০-২২ বছরের ওই মেয়েটিকে ৩/৪ যুবক নির্যাতন করে। সেখানে একটি মেয়েও দেখা যায়। উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ জানান, সাইবার পেট্রোলিংয়ের অংশ হিসেবে ভিডিওটি পুলিশের নজরে আসে।

উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, যৌন নির্যাতনকারী একজনের চেহারার সঙ্গে মগবাজার এলাকার এক যুবকের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করা ছবির মিল পাওয়া যায়। ওই আইডি ধরে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার মাকে ভিডিওটি দেখালে প্রথমে তিনি অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন, ভিডিওতে তার ছেলে রিফাতুল ইসলাম হৃদয় রয়েছেন। মগবাজার এলাকার অনেকেই তাকে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ বলে শনাক্ত করেছেন। হৃদয়ের বয়স ২৬ বছর।

হৃদয়ের মা ও মামার বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে চার মাস আগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, কৌশলে হৃদয়ের মামার হোয়াইটস অ্যাপ নাম্বার থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে হৃদয় জানান, তিন মাস আগে তিনি ইন্ডিয়া গেছেন। যৌন নির্যাতনের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটেছে ১৫-১৬ দিন আগে।  হৃদয় আরও জানান, ভিকটিম বাংলাদেশি। তার বয়স ২০-২২ বছর। বাসা ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায়, গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। ভিকটিমের আরো বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাওয়া হলে হৃদয় হোয়াটস অ্যাপে ভিকটিমের ভারতীয় পরিচয়পত্র পাঠান যা আধার কার্ড নামে পরিচিত। হৃদয়ের দেওয়া তথ্যমতে, আমরা ভিকটিমের পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। ভিকটিমের বাবা নিশ্চিত করেছেন নির্যাতিত মেয়েটি তার। হৃদয়ের সঙ্গে নির্যাতনে যারা অংশ নিয়েছে তাদের পরিচয়ও শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র যারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসহায়/বিদেশ গমনে ইচ্ছুক নারীদের প্রলুদ্ধ করে বিদেশে পাচার করে। তদন্তের প্রয়োজনে ভারতীয় পুলিশ এবং ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এই নৃশংস ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত হৃদয় বাবুর বাবা-মা ও মামাকে হাতিরঝিল থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মানবপাচারের মামলার প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, অভিযুক্ত ও ঘটনার শিকার তরুণীকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত আনার পদক্ষেপ নেবে পুলিশ। ভিকটিমের বাবা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমএইচ