রিকশাচালকদের কাছে জিম্মি যাত্রীরা  

  • নিজস্ব প্রতিবেদক     | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১, ০৬:০৫ পিএম

ঢাকা : কঠোর লকডাউনে রাজধানীর অভ্যন্তরে জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষের পকেট কাটছে রিকশাচালক ও বাইকাররা। গণপরিবহন না চলার সুযোগে ৩-৪ গুণ  বেশি ভাড়া আদায় করছেন তারা। অনেকটা নিরুপায় হয়ে অনেকে বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন; আবার অনেক জায়গায় তাদের সঙ্গে হচ্ছে বচসাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অতি প্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বিশেষ করে রিকশা আর বাইকার স্বাভাবিক ভাড়ার চাইতে তিনগুণ বা চারগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। রামপুরা বনশ্রীর ফরাজি হাসপাতাল থেকে তারাবো বিশ্বরোড যাওয়ার জন্য  আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাইকের ভাড়া জিজ্ঞাসা করেন। বাইকার ওই ব্যক্তির নিকট থেকে ৮০০ টাকা ভাড়া দাবি করে। বাইকারের এমন ভাড়া দাবির বিষয়ে তিনি অবাক হয়ে যান।

আরিফুর রহমান জানান, তারাবো যেতে এক ঘণ্টাও লাগবে না। উনি ২০০-৩০০ টাকা চাইতে পারেন। ৮০০ টাকা চান কীভাবে।

ভুক্তভোগীরা জানান, রিকশাচালক আর বাইকারদের এমন ভাড়া চাওয়া বিরল ঘটনা। যেখানকার ভাড়া ৫০  টাকা চাওয়া হচ্ছে দেড়শো টাকা আবার কখনো দুইশ টাকা। আর বাইকের ভাড়া যেখানে ২০০ চাওয়া হচ্ছে ৫০০ এর উপরে। অতি প্রয়োজনে বের হওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, ভাড়া নিয়ে ডাকাতি করছেন রিকশাচালক আর বাইকাররা।

পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় যাত্রী ও মোটরসাইকেল চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন যাত্রী নিয়ে গাবতলী যেতে মোটরসাইকেলে ভাড়া নেওয়া হয় ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। মোটরসাইকেলে নবীনগর পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রাইভেটকারে গাবতলীর ভাড়া জনপ্রতি নেওয়া হয় ৬০০ টাকা। নবীনগরের ভাড়া ৪০০ টাকা। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় সাধারণ মানুষকে।

মোটরসাইকেল চালক সাঈদ হোসেন (৩৫) জানালেন, সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি চৌকি রয়েছে। এজন্য বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে যেতে হয়। 

কথা হয় পোশাক শ্রমিক মাসুম সোবহানের (৩৭) সঙ্গে। মা-বাবার সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে গিয়েছিলেন। কারখানা বন্ধ থাকলেও আশুলিয়ায় বাসায় স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তাই পথে পথে নানা বাধা-বিপত্তির মাথায় নিয়েই ফরিদপুর থেকে তিনি যাচ্ছিলেন গাজীপুরে। পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পৌঁছে পড়েন যানবাহন সংকটে। পরে চেপে বসেন মোটরসাইকেলে। এজন্য তাকে গুনতে হয়েছে ১০০০ টাকা।

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ইউছুফ আলী (৪৫) জানান, তিনিসহ আরো চারজন যাবেন গাজীপুর। উত্তরার আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত জনপ্রতি গুনতে হয় ৬০০ টাকা করে। সেখান থেকে অন্য যানবাহনে যাবেন গাজীপুরে। এমন দৃশ্যই এখন চোখে পড়ে পাটুরিয়া ঘাটে।

জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবুল হোসেন গাজী বলেন, লকডাউনের আওতাভুক্ত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। কোনো যানবাহন চলাচল করলে আটক করা হচ্ছে। এসব যানবাহনের চালকের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই