‘বজ্রপাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ভিজিএফ কার্ড দেয়ার চিন্তা’

  • নিজস্ব প্রতিবেদন | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০১৬, ০৭:৫৭ পিএম

সম্প্রতি দেশব্যাপী বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ভবিষ্যতে এমন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ভিজিএফ কার্ড চালু করার কথাও চিন্তা করা হচ্ছে।  

শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বজ্রপাতে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী। এ সময় বজ্রপাতে ক্ষতিগ্রস্থদের হতাহতদের পরিবারকে মোট ১৮ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সরকার।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ মো. কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু এমপি,  প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন, নাওকি মাতসুমুরা, অধ্যাপক ড. এম আরশাদ মোমেন প্রমুখ।

ত্রাণমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে বলেন,  ‘প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে। আমরা সেই মোতাবেক প্রস্ততি নিতে চাই।’

তিনি জানান, চলতি বছরে বজ্রপাতে আহত এবং নিহতদের ১৮ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির পরিবার অস্বচ্ছল হলে তাদেরকে ভিজিএফ কার্ড দিয়ে সহযোগিতা করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা করার জন্য সচিবকে অনুরোধ করবেন বলেও জানান তিনি।

কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্বে প্রায় প্রতিদিন বজ্রপাতে ২ থেকে ২৪ হাজার লোক মারা যায় এবং আহত হয় ২ লাখ ৪০ হাজার লোক। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার। আর সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় ভেনিজুয়েলায় মারাকাইবো লেকে, গড়ে বছরে প্রায় ৩০০ দিন।

বাংলাদেশে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বজ্রপাতে মোট ১ হাজার ২৬৩ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে ১৭৯ জন, ২০১২ সালে ৩০১ জন, ২০১৩ সালে ২৮৫ জন, ২০১৪ সালে ২১০ জন, ২০১৫ সালে ১৮৬ এবং চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১০৩ জন।

বজ্রপাতে বাংলাদেশে প্রতি কোটিতে বছরে ৯ জন মানুষ মারা যায়। ভারতে ১ জন, নেপালে ২৪ জন এবং শ্রীলংকায় ২৭ জন।

এদিকে বজ্রপাতে বিগত ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ৩১৯ জন এবং একই সময়ে জাপানে মারা গেছে ২৪ জন।

কর্মশালায় বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থকাতে করণীয় সম্পর্কে বলা হয়, আমাদের দেশে এপ্রিল-জুন মাসে বজ্রপাত বেশি হয়; বজ্রপাতের সময়সীমা মাত্র ৩০ -৪৫ সেকেন্ড স্থায়ী হয়।

ঘন কালো মেঘ দেখলে বাইরে বের হবেন না। জরুরি প্রয়োজনে জুতা পরে বের হতে হবে। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, উঁচু স্থানে থাকবেন না। যতদূর সম্ভব দালানে আশ্রয় নিন, টিনের চালা এড়িয়ে চলুন। উঁচু গাছ পালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন ইত্যাদি।

এ সময় প্রকৌশলী প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ থাকবে কিন্তু যেন বিপর্যয় যেন না ঘটে। বজ্রপাতে মৃত্যৃর হার কমাতে তিনি মোবাইলে সতর্ক সংকেত চালু করার কথা বলেন। একই সঙ্গে বজ্রপাতে থেকে সচেতন হওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তকে লেখা অন্তর্ভূক্ত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এই প্রকৌশলী।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম