নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চান অর্ধেকের বেশি নাগরিক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম

ঢাকা: দেশের অধিকাংশ নাগরিক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষা খাতে কার্যকর সংস্কার দেখতে চান। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী পূর্ণাঙ্গ সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

সোমবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বিআইজিডি পালস সার্ভে’–এর গবেষণা পেপার উন্মোচন ও প্যানেল আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়। 

ভয়েজ ফর রিফর্মের কো–কনভেনর একেএম ফাহিম মাশরুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বিআইজিডি সিনিয়র গবেষক ড. মির্জা এম হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ শাহান এবং বিআইজিডি ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ।

জুলাই মাসে দেশের ৫ হাজার ৪৮৯ জনের ওপর চালানো জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ মানুষ ‘ভালোভাবে সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন’ চান। ১৭ শতাংশ ‘কিছু জরুরি সংস্কার’-এর পর নির্বাচন করতে রাজি। আর ১৪ শতাংশ ‘সংস্কার ছাড়াই দ্রুত নির্বাচন’-এর পক্ষে। ১৩ শতাংশের কোনো ধারণা নেই এবং ৮ শতাংশ মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক।

জরিপে জনগণের শীর্ষ অগ্রাধিকার ছিল—আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, বেকারত্ব হ্রাস, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন।

প্যানেল আলোচনায় ড. মির্জা এম হাসান বলেন, অর্থনীতি ও রাজনীতি মানুষের ভাবনার কেন্দ্র হলেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে অন্য ইস্যুতে মনোযোগ কমে যায়। দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলে আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয় বেশি গুরুত্ব পায়। তিনি যোগ করেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও মব নিয়ন্ত্রণে উদ্বেগ বেড়েছে, যদিও ভয় সংস্কৃতি কিছুটা কমেছে এবং নারীর অধিকার রক্ষায় সমর্থন বেড়েছে।

ড. আসিফ শাহান বলেন, অর্থনীতি ভালো থাকলেও নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। পুলিশ ও শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়নি এবং স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে দ্বিধা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, অনেকেই দ্রুত নির্বাচন নয়, বরং নির্বাচন–পরবর্তী সংস্কার চান।

জরিপে স্পষ্ট হয়েছে—জনগণ শুধু নির্বাচনের আয়োজন নয়, বরং নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষা খাতে দৃশ্যমান সংস্কারকে আস্থার প্রধান শর্ত হিসেবে দেখছে।

ওএফ