গুমের মতো ভয়াবহ অপরাধ বন্ধে শুধু আইন নয়, প্রয়োজন গভীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার—এমন মত দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তার মতে, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্ট অপরাধ এবং এটি প্রতিরোধে বিচার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘এনশিওরিং জাস্টিস: দি রোল অফ দি জুডিশিয়ারি ইন অ্যাড্রেসিং এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে গুমসংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি, সহযোগিতায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা আজ যে পরিবর্তিত বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আছি, তা এসেছে অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে। এই পরিবর্তনকে টেকসই করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা ছাড়া বিকল্প নেই।” তিনি আরও যোগ করেন, “বিচার বিভাগের সাহসী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা গুমের সংস্কৃতি নির্মূলে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, “রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প, আর বিচারকরা সেই শিল্পের স্রষ্টা। তাই তাদের রায় যেন মানবাধিকার ও ন্যায়ের চেতনা প্রতিফলিত করে, সেটিই সবচেয়ে জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বয় দরকার। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, প্রযুক্তি ও আধুনিক তদন্ত পদ্ধতির ব্যবহারই এ অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে পারে।”
বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, কমিশনের সদস্য হিসেবে, বলেন, “গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি।” তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে দ্রুত বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রণয়ন করছে, যেখানে সাক্ষী সুরক্ষা, ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা এবং নিরপেক্ষ তদন্তের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান।
এম