নবগঠিত পে কমিশন সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন নিজেদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। আলোচনা ও মতবিনিময়ের সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি পড়েছে সর্বনিম্ন বেতনের পরিমাণের ওপর। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন পে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিয়েছি সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা এবং গ্রেড সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১২টি করা হোক। ২০২০ ও ২০২৫ সালের বেতন সংশোধনের সম্ভাবনা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে সরকারি কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে আমরা এই প্রস্তাব দিয়েছি। বর্তমান বেতন বৈষম্য ১:১০ অনুপাতে, যা কমিয়ে ১:৪ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য হ্রাস পাবে।’
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রাইভেট খাতের বেতন বৃদ্ধির দাবিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আব্দুল মালেক জানান, ‘একজন মানুষের জন্য দিনে তিন বেলা খরচ হয় প্রায় ১৫০ টাকা। ছয় সদস্যের পরিবারের জন্য মাসে অন্তত ২৭ হাজার টাকার খরচ হয়। বাসা, চিকিৎসা, শিক্ষা খরচসহ মোট খরচ ৫০ হাজার টাকারও কম নয়।’
পে কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, নতুন বেতন কাঠামো সংক্রান্ত অনলাইনে দুই হাজারের বেশি সংগঠন মতামত দিয়েছে। প্রাথমিক যাচাই–বাছাই শেষে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সম্পন্ন হয়েছে। সব প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করা হবে, যা কমিশনের সদস্যদের সম্মতিতে সরকারকে জমা দেওয়া হবে।
কমিশনের লক্ষ্য বেতন বৈষম্য হ্রাস করা এবং বিদ্যমান গ্রেড কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা। গ্রেড সংখ্যা কমানো হবে, তবে কতটি গ্রেড থাকবে এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত কত হবে তা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার জানান, ‘নতুন পে স্কেল প্রণয়নের প্রক্রিয়া শেষে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাব জমা দেওয়া হতে পারে। এ সময় বেতন ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।’
শিক্ষাসচিব রেহানা পারভীন বলেন, ‘জাতীয় বেতন স্কেল শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। শিক্ষকদের বাড়িভাড়া এবং অন্যান্য ভাতা নতুন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
এসএইচ