সচিবালয়ের নবনির্মিত ২০ তলা ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
ফাইল ছবি

সচিবালয়ের নবনির্মিত ২০ তলা ভবনের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের পর ফাটল দেখা দিয়েছে। সচিবালয়ের পশ্চিম-উত্তর প্রান্তে অবস্থিত এই ১ নম্বর ভবনেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অফিস করেন। হঠাৎ দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ভবনে কর্মরত অনেকেই আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন।

গত শুক্রবার সকালে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানীসহ সারা দেশ কেঁপে ওঠে। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং ৬০০-র বেশি মানুষ আহত হন। নরসিংদী ছিল ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র। পরে ঢাকায় আরও দুটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

মঙ্গলবার ভবন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ১০ তলার ৯৩০ নম্বর কক্ষের দরজার নিচের অংশে এবং তার একতলা ওপরে ১০০ নম্বর কক্ষের সামনের দেয়ালে স্পষ্ট ফাটল রয়েছে। কিছু জায়গায় পলেস্তরা খসে পড়েছে। এ দুটি তলায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত কাজ করেন।

একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “কয়েক শ কোটি টাকায় নির্মিত এই ভবনে এত দ্রুত ফাটল দেখা দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সবার মধ্যে ভয় কাজ করছে। ভবনটি চালু হয়েছে মাত্র এক বছরও হয়নি।”

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ফাটলগুলো ইটের তৈরি ৫ ইঞ্চি পুরু দেয়ালে দেখা গেছে, যা ভবনের মূল কাঠামোর অংশ নয়। তিনি বলেন, “বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। পিলারসহ ভবনের মূল স্ট্রাকচারে কোনো ফাটল নেই। তাই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ নয়। দ্রুতই এসব ফাটল মেরামত করা হবে।”

৪৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ তলা ভবনটির কাজ চলতি বছরের মে মাসে শেষ হয়। এরপর থেকেই এখানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে।

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় ‘সচিবালয়ে ২০ তলাবিশিষ্ট নতুন অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন পায়। দুটি বেইসমেন্টসহ ২০ তলা ভবনটি নির্মাণের দায়িত্ব পান ঠিকাদার জিকে শামীম। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয় এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কাজের পরিমাপ করে দেখা যায়, তার সম্পাদিত কাজের মূল্য ৪ কোটি ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮ টাকা।

পরবর্তীতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করে এবং প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।

অবকাঠামোর মান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, “বর্তমান ফাটল উদ্বেগের কারণ নয়, তবে তা দ্রুত মেরামত করা হবে।”

এসএইচ