পে স্কেল নিয়ে প্রজ্ঞাপন হচ্ছে না ডিসেম্বর, সরকারের উদ্যোগ কী?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের হুঁশিয়ারি নতুন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা জানিয়েছে, নবম জাতীয় বেতন কমিশনের প্রজ্ঞাপন ডিসেম্বরের মধ্যে জারি না হলে ১০ জানুয়ারি থেকে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে চরম চাপ তৈরি হয়েছে, তবে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো পদক্ষেপ এখনও দেখা যায়নি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। তবে সুপারিশ চূড়ান্তকরণ পর্যায়ে গিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় তাদের আশা আংশিকভাবে স্থগিত রয়েছে। কর্মচারীরা মনে করছেন, বেতন বৈষম্য ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে নতুন বেতন কাঠামোকে দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি।

সংগঠনটি দাবি করছে, বিদ্যমান ২০টি গ্রেড ভেঙে ১০টি ধাপে পুনর্গঠন করে ১:৪ অনুপাতে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। এতে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান বৈষম্য দূর হবে এবং নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাত্রা থেকে মুক্তি পাবে। সচিবালয় ভাতা, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন এবং সচিবালয় রেশন ভাতা প্রবর্তন-এই তিনটি দাবি স্মারকলিপিতে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের স্থিতিশীল ও নিরপেক্ষ পদক্ষেপের অভাবে কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এমন দেরি নতুন ধরনের সামাজিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমকে জটিল করে তুলতে পারে।

সরকারের সম্ভাব্য উদ্যোগ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বেতন কমিশনের সুপারিশ দ্রুত চূড়ান্ত করার চেষ্টা হতে পারে। তবে এর আগে কমিশনের রিপোর্ট ও প্রস্তাবিত কাঠামো যথাযথভাবে যাচাই করা এবং বাজেট অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

একই সঙ্গে রাজনৈতিক মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, কর্মচারীদের দাবি ও আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনায় সরকারের কাছে দেরি করা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে কর্মসূচি কঠোর করার হুঁশিয়ারি বাস্তবায়নযোগ্য রূপ নেবে।

বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সরকারের জন্য এটি একটি সমীকরণ-কর্মচারীর ন্যায্য দাবি পূরণ ও স্থিতিশীল প্রশাসনিক পরিবেশ বজায় রাখা। দেরি বা অবহেলা উভয়ই সামাজিক চাপ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে। তাই দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া নবম পে-স্কেলের বাস্তবায়ন কার্যত বিলম্বিত হয়ে যাবে।

এসএইচ