ভাষা আন্দোলনের উৎসে ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭, ০৯:৫৭ এএম

ঢাকা : পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিলগ্নে  ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের অনুরূপ পদক্ষেপ হিসেবে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব করে বক্তব্য রাখেন। এর পরই বাংলা ভাষার প্রাণপুরুষ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ওই প্রস্তাবের প্রতিবাদ ও কঠোর সমালোচনা করেন। বিলম্ব না করে এর শক্ত জবাব দেয়ার জন্য তিনি ‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা’ নামে একটি নিবন্ধ রচনা করেন। 
এতে তিনি বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করা হলে তা বাঙালির জন্য পরাধীনতার নামান্তর হবে বলে মত  প্রকাশ করেন। এই প্রস্তাবকে তিনি প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও আÍনিয়ন্ত্রণাধিকারের নীতিবিগর্হিত বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন। 

তার এই বক্তব্যে সমকালীন পূর্ব বাংলার বাঙালিসমাজ উদ্দীপ্ত হয়। উপমহাদেশের সমকালীন শিক্ষিত সমাজকে উদ্দীপ্ত করার জন্য নিবন্ধটি তিনি ভারতে সাপ্তাহিক কমরেড পত্রিকায় ইংরেজিতে প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। কমরেড পত্রিকায় ‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা’ শিরোনামে ১৯৪৭ সালের ৩ আগস্ট নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। এভাবে পাকিস্তান সৃষ্টির প্রাক্কালে বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কুফল সম্পর্কে শিক্ষিত সমাজের একটি গ্রুপকে তিনি উদ্বেলিত করতে সক্ষম হন। এ কারণে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে ভাষা আন্দোলনের উৎসপুরুষ বলা হয়।

পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথম দিকে সরকারি কাজকর্মে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায়। তৎকালীন প্রশাসকরা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে কেবল উর্দু ও ইংরেজিতে যাবতীয় কাজকর্ম সম্পদন করতে আগ্রহী। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তখন রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছিল। কারণ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, আবুল হাসিম প্রমুখ বাঙালি নেতা তখনো পূর্ববঙ্গে আসেননি। এমন রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি ভাষা আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই