জমি নিয়ে বিরোধ

পুলিশ-সন্ত্রাসী হামলায় মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালে!

  • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০১৭, ০৬:৫৫ পিএম
পুলিশ ও সন্ত্রাসী হামলায় আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ

সাতক্ষীরা: জমি বিরোধের জের ধরে আব্দুর রশিদ (৭৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী মিলে পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (৮ এপ্রিল) ভোরে জেলার সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত মুক্তিযোদ্ধা রসুলপুরের মৃত মোজাহার হোসেনের ছেলে, মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং ২০৩০।

আহত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে রউফুনেচ্ছা জানান, রসুলপুর এলাকায় তাদের ১৫ শতক জমির উপর বসতবাড়ি। ওই জমির প্রতি কু-নজর পড়ে কুশখালি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মুন্না ও আব্দুল মজিদের ছেলে মিলন হোসেনের। তারা জমিটি জোরপূর্বক দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় তাদের হয়রানি করে আসছিল। সম্প্রতি মুন্না থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেয়।

তিনি আরো জানান, পুলিশ গত শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকালে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে তরিকুলকে ধরে নিয়ে যায় এবং সন্ধ্যায় আবার ছেড়েও দেয়। এরপর রাত ১২ টার দিকে সদর থানার এস আই রমজান আলির নেতৃত্বে ১০/১২ জন পুলিশ ও সন্ত্রাসী মুন্না ও মিলনের নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বৃদ্ধ বাবাসহ তার ভাই ও স্ত্রী-সন্তানদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে এবং ঘরের ভিতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধু আসমা খাতুন বলেন, রমজান দারোগা যাওয়ার সময় বলে এসেছে তোরা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস তাহলে তোদের জামায়াতের মামলায় ঢুকিয়ে দেব। বোম মেরে তোদের উড়িয়ে দেব। যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যা।

তিনি আরো বলেন, পুলিশ আমাদের পরিবারকে যে নির্যাতন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর বিচার চাই।

এদিকে রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে নিয়ে আসা হয়, তখন তিনি ভ্যানের উপর অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। তার হাত পায়ে রক্ত জমাট বাধা ছিল।

সার্বিক বিষয়ে সদর থানার এস আই রমজান আলি জানান, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম । সেখানে কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দীক সাংবাদিকদের জানান, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি পুলিশ ও সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। এস আই রমজানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

এদিকে শহরে মুক্তিযোদ্ধার উপর পুলিশি ও সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম