দুদকে অসুস্থ হওয়ার নাটক বাচ্চুর

  • জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০১৭, ০৬:৪৯ পিএম

ঢাকা: সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগকারী আবদুল হাই বাচ্চুকে দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দ্বিতীয় দিনে তাকে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ সময় তিনি অনেকটা নার্ভাস বোধ করেন বলে জানা গেছে। বুধবার(৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

তবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থবোধ করেন। পরে দুদক কার্যালয়ের চিকিৎসক ডা. জ্যোতির্ময় চৌধুরী তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তবে ডাক্তার জানান তিনি সুস্থ আছেন। পরে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেলা আড়াইটার দিকে তিনি কিছুটা অসুস্থবোধ করেছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা ৫টার সময় দুদক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আবদুল হাই বাচ্চু গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর তাকে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই দিন তিনি দুদক কার্যালয়ে প্রবেশের সময় গণমাধ্যমের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বের হয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যা জানতে চাওয়া হয়েছে, আমি তার উত্তর দিয়েছি। আবার আমাকে ডাকা হলে আমি সহযোগিতা করব। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো এখনো তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। এখনো স্টাবলিশ (প্রমাণিত) হয়নি।

দুদকের পরিচালক জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি বিশেষ টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তাকে।

তখন বাচ্চু বলেছিলেন, তার অনেক টাকা আছে। এজন্য দুর্নীতির প্রয়োজন নেই। তাকে ফের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিলে লুট হওয়া টাকা উদ্ধার করতে পারবেন।

গত ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুসহ ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি না করায় সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এরপরই দুদক তাদের তলব করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। এর মধ্যে গুলশান শাখায় ১৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখার ৩৮৭ কোটি, মূল শাখায় প্রায় ২৪৮ কোটি ও দিলকুশা শাখায় ১৩০ কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ শনাক্ত করা হয়। পাশাপাশি বেসিক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে আরও এক হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি বেরিয়ে আসে। সব মিলে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে।

ঋণ কেলেঙ্কারি মাথায় নিয়ে ২০১৪ সালের ৬ জুলাই ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন আবদুল হাই বাচ্চু। পরের বছর বাচ্চুকে বাদ দিয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ১৫৬ জনের জনের জনের বিরুদ্ধে ৫৬টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

সোনালীনিউজ/তালেব