পরীক্ষায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী, স্নায়ুচাপে অভিভাবক

  • শেখ আবু তালেব, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০১৮, ১১:৫৪ পিএম

ঢাকা: বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা। আটটি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এবারের স্কুল বিভাগের এসএসসি, মাদরাসার দাখিল ও কারিগরি বোর্ডের সমমান পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নিচ্ছে।

গত বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন।

এবারের পরীক্ষায় ছাত্রদের সংখ্যাই বেশি। সকল বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে, পরীক্ষায় অংশ নেয়া মোট ছাত্রের সংখ্যা ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ ও ছাত্রীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮ হাজার ৬২৭ জন। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নিচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার ২ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৬ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে।

বিশাল এই সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষার আসনে বসলেও তাদের চেয়ে বেশি স্নায়ুচাপে ভুগছেন অভিভাবকরা। সন্তানের পরীক্ষা কেমন হবে, রেজাল্ট কেমন হবে; সেই চিন্তার শেষ নেই। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন পরামর্শ, দোয়া। মসজিদ ও মাদরাসায় বিশেষ দোয়ার আয়োজন করছেন তারা। এছাড়াও পরীক্ষা চলাকালীন নিজেদের অনেক কাজ গুছিয়ে নিয়েছেন সমন্বয় করে। 

সূত্র জানিয়েছে, মোট ২৮ হাজার ৫৫১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ৪১২ কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবার এসএসসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৭ লাখ ৯২ হাজার ৩৪৪ জন, ছাত্রী ৮ লাখ ৩৫ হাজার ০৩৪ জন। ১৭ হাজার ২০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৯৪৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হবে।

মাদরাসার দাখিল পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী হলো ২ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৮জন, ছাত্রী ১ লাখ ৪৬ হাজার ১০৪ জন। দাখিল পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৬ জন বেশি।৯ হাজার ১০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭০৭টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮৭ হাজার ২২০ জন, ছাত্রী ২৭ হাজার ৫৪৯ জন। ২ হাজার ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের ৭৪১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এবারে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় গতবারের চেয়ে মোট ২০৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, কেন্দ্র বেড়েছে ১৭৬টি। তাছাড়া এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭৩ জন, অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৬ জন।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে শিক্ষামন্ত্রীও পরীক্ষার সর্বশেষ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে আধঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীকে হলে নিজ আসনে বসতে হবে। এ সময়ে তাদের উত্তরপত্র দেয়া হবে। তারা আস্তে আস্তে খাতা পূরণ করে নেবে।

তিনি বলেন, কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন, ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন কেন্দ্রসচিব।

২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়সমূহ এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়ণের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়ণে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে প্রেরণ করবে।

তিনি বলেন, এবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট সময় বাড়ানোসহ সাহায্যকারীর সহায়তায় পরীক্ষা দিতে পারবে।

পরীক্ষা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৪ মার্চ বলে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সোনালীনিউজ/আতা