কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮, ১২:১৬ পিএম

ঢাকা : ১৪৪ ধারা ভাঙায় ছাত্রদের ওপর নির্দয়ভাবে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। বায়ান্নোর ২১ ফেব্রুয়ারির সেই দুপুর ঢাকার বাতাস ভারি করে তোলে। ছাত্রদের হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণ ঘটনাস্থলে আসার উদ্যোগ নেয়। ছাত্রদের আন্দোলন গণমানুষের আন্দোলনে রূপ নেয়।

সংস্কৃতি জগতের লোকজনও এ আন্দোলনে ভ‚মিকা নেন। রেডিও শিল্পীরা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শিল্পী ধর্মঘট আহ্বান করেন এবং রেডিও স্টেশন পূর্বে ধারণকৃত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে থাকে। গণপরিষদে অধিবেশন শুরুর প্রস্তুতি চলছিল। পুলিশের গুলির খবর জানতে পেরে মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগিশসহ বিরোধীদলীয় বেশ কয়েকজন নেতা অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান।

২১-এর এই প্রেক্ষাপটেই কবি মাহবুব-উল-আলম রচনা করলেন বিখ্যাত কবিতা। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক। আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ প্রমুখ পণ্ডিতেরা সেদিন এ আন্দোলনে উপযুক্ত ভ‚মিকা নিয়েছিলেন। সে রাতে মাহবুব-উল-আলম ভাষায় ও ছন্দে প্রকাশ করলেন বিক্ষোভ। জন্ম হলো সেই বিদ্রোহী কবিতার- ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।’

২২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘির ময়দানে বিশাল প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারাদিন হরতালের পর লক্ষাধিক বিক্ষুব্ধ মানুষের সমাবেশে এ কবিতাটি পাঠ করা হয়েছিল। কবিতা শুনে উত্তেজিত জনতা ক্রোধে অধীর হয়ে উঠেছিল। একটি কবিতার শক্তি বুলেটের চেয়ে বেশি, একথা প্রমাণিত হয়েছিল। হত্যাকারী সরকার দিশেহারা হয়ে কবিতাটি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করলেও হাতে হাতে কপি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল ছাত্রদের মধ্যে, সুদূর গ্রাম পর্যন্ত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই