ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন কি গণভোট ছাড়া সম্ভব?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: জুলাই সনদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ-এই তিনটি বিতর্কিত ইস্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। বিশেষ করে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েই সমালোচকরা উদ্বিগ্ন। বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সকলেই গণভোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল বুধবার যমুনায় নির্বাচনী প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনকে ব্যর্থ করতে দেশের ভেতর ও বাইরে বড় শক্তি কাজ করবে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে।’ তার এই মন্তব্যে জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে-ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন কি গণভোট ছাড়া সম্ভব?

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, ‘নভেম্বরের পর মন্ত্রিসভার বৈঠক আর হবে না। তখন সরকার নির্বাচন কমিশনের অধীনে দায়িত্ব পালন করবে।’ পরে অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিবৃতিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে-‘নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদ দায়িত্বে থাকবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই মুহূর্তে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ায় টেনে আনতে চাই না।’

জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের ভাষ্য, ‘তত্ত্বাবধায়ক ফিরলেও এবারের নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারও দায়িত্ব পালন করতে পারে, কিন্তু জুলাই সনদে দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ না রাখাকে আমরা প্রতারণা মনে করি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রাশেদ আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘ভোট ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করতে নির্বাচনের সময়সূচি স্পষ্ট হওয়া দরকার। স্থিতিশীলতার জন্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন জরুরি।’

অন্য শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উপদেষ্টাদের বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, কেউ কেউ মনে করছেন দৈবক্রমে নির্বাচন নাও হতে পারে। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে।’

রাজনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের প্রধান দলগুলো যদি নির্বাচনের সময় পিছিয়ে আনার আবেদন করে, তবেই তা বিবেচনা করা হতে পারে। অন্যথায় ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ পরিস্থিতি ভোটারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। গণভোট না হলে নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষ এখন সংশয়পূর্ণ।

এসএইচ