ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপির দ্বন্দ্ব, জামায়াতের সক্রিয়তা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকা-১৩ আসনেও উত্তাপ শুরু হয়েছে। মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপি, জামায়াত, এনডিএম ও অন্যান্য প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় দ্বিধাবিভক্ত মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে দলের সমর্থিত একক প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করানোর পর বিএনপির স্থানীয় কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু নেতাকর্মী সালামের পাশে থাকলেও দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।

জামায়াতের একক প্রার্থী মো. মোবারক হোসাইন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছেন। মাদক, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি এলাকার মানুষের সঙ্গে যুক্ত আছি। ভোটাররা একটি দুর্নীতিহীন রাষ্ট্র চান। সেই চাওয়ায় জামায়াতের প্রতি আস্থা রয়েছে।”

মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকায় দিনমজুর ও ব্যবসায়ীরা গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। চুরি, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাংয়ের কারণে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে নিরাপদ ও অপরাধমুক্ত ঢাকা-১৩ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ববি হাজ্জাজ জানান, তিনি নির্বাচিত হলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে কিশোর গ্যাং, মাদক ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন।

স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, প্রার্থীকে নির্বাচিত হলে মোহাম্মদপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন, মেয়েদের রাতে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা এবং খাল-নালা পুনঃস্থাপন ভোটারদের প্রধান প্রত্যাশা। ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ আশা করছেন, প্রার্থীরা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবেন।

ববি হাজ্জাজ ও আবদুস সালাম ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও এনডিএমের নেতারা সক্রিয়। পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে নির্বাচনী এলাকা ছেয়ে গেছে। জামায়াত প্রার্থীর প্রচারণা তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে দৃঢ়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা-১৩ আসনে বৃহৎ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-১৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৩৩, নারী ১ লাখ ৯২ হাজার ২১১ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার পাঁচজন।

ঢাকা-১৩ আসনে নির্বাচনী উত্তাপ ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ দুটোই ভোটার ও প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভোটাররা এবার কাকে নির্বাচিত করবেন তা নির্ভর করছে কে সবচেয়ে দৃঢ়ভাবে অপরাধ ও দুর্নীতি দমন ও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিতে পারছে তার উপর।

এসএইচ