ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা বা না ফেরা আগামী নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, তারেকের দেশে ফেরা একান্ত তার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সিদ্ধান্ত, যা দলের রাজনীতির দিকনির্দেশনায় প্রভাব ফেলে না।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ‘ফিউচার বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যে বিশ্বাস এবং আস্থা প্রদর্শন করে, সেটিই বিএনপির রাজনীতির মূল ভিত্তি। সুযোগ পেলেই সাধারণ মানুষ তাদের ভোট ও মতের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ দেখায়।
তারেক রহমানের ট্রাভেল ভিসা প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, কেন তাকে ট্রাভেল ভিসা দেওয়া হবে তা তার জানা নেই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তার দেশে ফেরার পথে কোনো বাধা নেই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও এ বিষয়ে ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছেন, তারেক দেশে আসতে চাইলে এক দিনের মধ্যে ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হবে।
অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি আরও বলেন, বিএনপির ইশতেহার বাস্তব পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হবে। ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ করে তরুণদের কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করা হবে। এছাড়া দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগোপযোগী পরিবর্তন জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ৫৯ বছর বয়সে একজন নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রকে দেওয়া সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অথচ চাকরিজীবীদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো গঠিত হয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে তিনি দেশের বর্তমান সরকারের কূটনীতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, যে সরকার জনগণের মন্তব্য, মতামত ও অধিকার রক্ষা করে না, তাকে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কাঠামোর মাধ্যমে বাধ্য করা সম্ভব নয়।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারেক রহমানও নিজের অবস্থান স্পর্শকাতর উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশে ফেরার বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এবং বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানানোর সুযোগ সীমিত। এ প্রসঙ্গে একদল বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তারেকের দেশে ফেরা রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিবেচনার সংমিশ্রণ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আরও বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে একবারের ট্রাভেল পাস দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। এতে তার দেশে আসা এক দিনের মধ্যে সম্ভব। এ তথ্য রাজনৈতিক মহলে প্রভাবশালী হলেও দলের সাধারণ কর্মী ও ভোটাররা মনে করছেন, তারেকের সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত এবং তা দলীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, দেশের রাজনীতি মানুষের আস্থার উপর দাঁড়িয়ে। তাই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তারেকের দেশে ফেরা বা না ফেরা নির্বাচন বা দলের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবে না। দলের মূল লক্ষ্য দেশের জনগণের ক্ষমতায়ন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং তরুণদের দক্ষতার উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করা।
এসএইচ