সংসদে গিয়ে চাঁদাবাজদের তালিকা প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন হাদি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদি সংসদে গিয়ে চাঁদাবাজদের নাম প্রকাশ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচিত হলে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াই হবে তার প্রধান লক্ষ্য-এ কথা তিনি একাধিকবার প্রকাশ্যে বলেছেন।

মৃত্যুর কিছুদিন আগে এক বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওসমান হাদি বলেন, ঢাকা-৮ এলাকার কোনো প্রান্তে চাঁদাবাজি চলতে দেওয়া হবে না। সিন্ডিকেট বড় হলেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তিনি আপসহীন থাকবেন। তার ভাষায়, সব বন্ধ করতে পারবেন কি না, সে নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও কিছু কাজ তিনি করেই ছাড়বেন।

চাঁদাবাজি প্রতিরোধে নিজের প্রথম পদক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ঢাকা-৮-এর কোনো সবজিওয়ালা বা ভ্যানচালকের কাছ থেকে কেউ চাঁদা তুললে তিনি নিজে টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়াবেন। চাঁদা তুলতে হলে আগে তার গায়ে হাত দিতে হবে-এই দৃঢ় অবস্থানও তিনি তুলে ধরেন।

আর যারা নিজেরা মাঠে না নেমে লোক পাঠিয়ে চাঁদাবাজি করান, তাদের বিষয়েও কঠোর ছিলেন হাদি। তিনি বলেছিলেন, এ ধরনের ‘রাঘব বোয়ালদের’ নাম জানার পর সংসদে দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহ বলে প্রত্যেকের নাম প্রকাশ করে দেবেন। এরপর কী হবে, তা আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়ে তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করবেন-এমন প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।

চাঁদাবাজির পাশাপাশি হাসপাতালকেন্দ্রিক বিভিন্ন সিন্ডিকেট নিয়েও কথা বলেছিলেন ওসমান হাদি। শাহবাগ ও ঢাকা-৮ এলাকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ও অ্যাম্বুলেন্স সেবাকে ঘিরে যে অনৈতিক ব্যবসা গড়ে উঠেছে, তা বন্ধ করতে তরুণদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। রোগী ও স্বজনদের সহায়তায় ভলান্টিয়ার সার্ভিস চালুর মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।

ওসমান হাদির ভাষায়, তিনি যা বলতেন, তা করার জন্যই বলতেন। আল্লাহ যদি তাকে সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ দিতেন, তাহলে শুধু ঢাকা-৮ নয়, দেশের অন্য সংসদ সদস্যদেরও নিজ নিজ এলাকার মানুষের কাছে জবাবদিহির মুখে পড়তে হতো।

আজ তিনি নেই। তবে সংসদে দাঁড়িয়ে চাঁদাবাজদের নাম প্রকাশের যে অঙ্গীকার তিনি করেছিলেন, তা তার রেখে যাওয়া সাহসী রাজনৈতিক অবস্থানেরই প্রতিচ্ছবি হয়ে রইল।

এসএইচ