করোনার প্রাদুর্ভাব

রাজধানীতে ৩০৫ আইসিইউ বেডের ৯০টি খালি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২০, ০৩:৪৮ পিএম

ঢাকা : রাজধানী ঢাকায় ক্রমেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জটিল রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসা নিতে হচ্ছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। মহানগরীতে করোনা ডেডিকেটেড ১৯টি হাসপাতালে কমে আসছে খালি আইসিইউ বেডের সংখ্যা। হাসপাতালে ৩০৫টি আইসিইউ বেডের মধ্যে এখন খালি আছে মাত্র ৯০টি।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনা রোগীদের শতকরা ৮০ শতাংশের মধ্যে মৃদু লক্ষণ দেখা দেয়। তাদের হাসপাতালে যেতে হয় না। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশের উপসর্গ তীব্র হয় এবং হাসপাতালে যেতে হয়। বাকি ৫ শতাংশের অবস্থা থাকে জটিল, তাদের আইসিইউ বেডের পাশাপাশি দরকার হয় ভেন্টিলেটর।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা মহানগরীর সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেড আইসিইউ বেড ১৬টি, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬টি। এই সবগুলো বেডেই রোগী ভর্তি রয়েছে।

এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪টি বেডের মধ্যে রোগী রয়েছেন ২২ জন, দুইটি শয্যা ফাঁকা; রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ১২ জন, তিনটি শয্যা ফাঁকা; শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ছয় জন, ১০টি শয্যা ফাঁকা এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ছয়টি শয্যায় রোগী আছেন তিন জন, তিনটি শয্যা ফাঁকা।

বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ বেড শূন্য দেখানো হয়েছে।

বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ১০টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ৯ জন, ফাঁকা রয়েছে একটি শয্যা; আসগর আলী হাসপাতালের ৩১টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ২৫ জন, ছয়টি শয্যা ফাঁকা; স্কয়ার হাসপাতালের ২৫টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ১৪ জন, ফাঁকা রয়েছে ১১টি; ইউনাইটেড হাসপাতালের ২২টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ১৪ জন, ফাঁকা ৮টি; ইম্পালস হাসপাতালের ৫৬টি শয্যায় রোগী আছেন ১৪ জন, ফাঁকা ৪২টি এবং এ এম জেড হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেডে রোগী আছেন ছয় জন, বাকি চারটি বেড ফাঁকা আছে।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ইবনে সিনা হাসপাতালের ছয়টি শয্যা, এভার কেয়ার হাসপাতালের ২০টি শয্যা এবং বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ১২টি শয্যাতেই রোগী ভর্তি আছেন।

অর্থাৎ, ঢাকা মহানগরীর করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৩০৫টি শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ২১৫ জন, বাকি ৯০টি শয্যা শূন্য রয়েছে।

আইসিইউতে রোগী কেন বাড়ছে জানতে চাইলে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা: শাহজাদ হোসেন মাসুম বলেন, ‘ভাইরাস আগের চেয়ে আরো বেশি তীব্রতা নিয়ে আক্রমণ করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আবার ঢাকার বাইরে থেকেও জটিল রোগীদের এখানে রেফার করা হচ্ছে। কারণ, ঢাকার বাইরে আইসিইউ ব্যবস্থাপনা তত উন্নত নয়।’

ঢাকার সরকারি আইসিইউ শয্যাগুলোর অধিকাংশই ভর্তি থাকে জানিয়ে ডা: শাহজাদ হোসেন বলেন, ‘আবার বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সেবা সবার পক্ষে নেওয়া সম্ভব হয় না।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই