রমজানের যে অভ্যাসগুলো ধরে রাখা উচিত

  • ধর্মচিন্তা ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৪, ০৭:০৯ পিএম

ঢাকা : পবিত্র রমজান মাসে মুসলিমরা কিছু নিয়ম কানুন এবং কিছু অভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করেন। রমজানের শিক্ষায় গুনাহমুক্ত এবং পরিশুদ্ধ জীবনের চেষ্টা করেন অনেকেই।

রোজার মাসে তো বটেই, বছরজুড়ে এই অভ্যাসগুলো থাকা ভালো। রমজানের গুণগুলো নিজের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারলে পরবর্তী জীবনও শান্তি ও সুখময় হওয়ার পাশাপাশি হবে পরিশুদ্ধ ও ধৈর্যশীল।

তবে রমজানের পরে অনেকেই সে ভালো গুণগুলো থেকে দূরে সরে যায়। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই এসব ভাল অভ্যাস ও গুণ রমজান ছাড়াও বছরের বাকি সময় ধরে রাখা যায়।

রমজানের ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার কিছু উপায় রয়েছে যা দেয়া হল এখানে...

১. সপ্তাহে ১-২ দিন রোজা পালন : ভালো অভ্যাস ধরে রাখার প্রথম ধাপ হল রমজানের পরও প্রত্যেক সপ্তাহে ১-২ দিন রোজা পালন করার চেষ্টা করা। তাতে খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা সহজ হয়। এতে করে খারাপ কাজ থেকে দুরে থাকা, ধৈর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শারীরিক স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারও রয়েছে।

[220337]

স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা যায়, রোজা বা উপবাস পালন মানুষের শরীর ও মনের জন্য অনেক উপকারি। রোজায় মানুষের মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বেড়ে যায়। ঘুম, মনোযোগ ও শারীরিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। নার্ভের কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও উন্নতি হয়।

এছাড়া সপ্তাহে দুইদিন রোজা রাখা সুন্নতের অনুসরণও বটে। আমাদের প্রিয় নবীজি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি সপ্তাহে ২দিন (সোম ও বৃহস্পতিবার) রোজা রাখতেন।

২. প্রতিদিন কোরআন পড়া : রমজানের মাস জুড়ে সবাই পবিত্র কোরআন শরীফ পড়ে থাকেন। অনেকের নিয়ত থাকে খতম দেওয়ার। এই অভ্যাসটা রোজার পরও ধরে রাখা উচিত। বেশি না হলেও প্রতিদিন অল্প অল্প বা অন্তত একপাতা করে কোরআন পড়া উচিত।

৩. নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা : রোজা মানুষকে শৃংখলিত জীবনের দিকে পথ-নির্দেশ করে। রোজায় মানুষ যেমন সময় মতো সাহরি, সময় মতো জামাআতে নামাজ আদায় কিংবা সময় মতো ইফতার, তারাবিহ অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজগুলো করতে শেখায়। একজন মানুষ যদি রমজানের পরেও এসব নিয়ম কানুন ও সময় মেনে চলতে পারে, তবে বাস্তবজীবনে সেই মানুষ নিয়ম-নিয়ন্ত্রিত সফল মানুষে পরিণত হতে পারে।

[220284]

৪. সত্যবাদী হয়ে ওঠা : মানুষের সব খারাপ চরিত্র বা আচরণ ধুয়ে-মুছে সুন্দর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত করে তোলে রোজাদার। যে ব্যক্তি রোজা রাখেন তিনি কখনও মিথ্যা কথা বলতে পারেন না। মিথ্যা বলতে গেলে নিজে থেকেই একটা খারাপ অনুভূতি জাগ্রত হয়। রোজার পরও এই অভ্যাস ধরে রাখা উচিত। এতে করে একটি পরিশুদ্ধ পরিপূর্ণ জীবন লাভ করা যায়।

৫. দান অব্যাহত রাখা : রোজায় যাকাত এবং ফিতরা আদায়ের কারণে দান করা হয়েই থাকে। তবে চেষ্টা করতে হবে যে রোজার পরেও এই দানের অভ্যাস অব্যাহত রাখা। কেননা দান-সহযোগিতা মানুষকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। রমজানে যেভাবে বেশি সাওয়াব লাভের আশায় মানুষ দান-সাদকাহ করে, রমজান পরবর্তী সময়েও উচিত গরিবদের দান-সাদকাহের অভ্যাস চালু রাখা।

দানের কার্যকারিতা শুধু আখেরাতে নয়, বরং দুনিয়াতেও লাভ হয়। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দান-সাদকা মানুষের বিপদ-আপদ দূর করে দেয়।’

৬. ভালো কাজে আগ্রহী হওয়া : রোজায় সবাই প্রতিবেশি কিংবা আত্মীয়ের সাথে মিলেমিশে চলে, ভালো ব্যবহার করে। রোজার পরেও সবার উচিত একে অপরের সাথে আচরণ করা। কারো মাঝে অন্যায় বা খারাপ আচরণ থাকলে তা থেকে বেঁচে থাকতে ভালো কাজ বা গুণের পরামর্শ দেয়া। একে অপরকে নিয়মিত ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করা।

এমটিআই