শিরিন সুলতানা যেন দঙ্গলের সেই গীতা কুমারী

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৮:৫১ পিএম

ঢাকা : ভারতীয় সিনেমা দঙ্গল–এর কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। সেখানে আমির খান তার বড় মেয়ে ববিতাকে কুস্তিগির বানানোর জন্য উঠেপড়ে লাগেন। শেষ পর্যন্ত মেয়েটি বাবার মুখ উজ্জ্বল করে কমনওয়েলথ পুরস্কার অর্জন করে। যাকে নিয়ে এই সিনেমা তৈরি বাস্তবের সেই ববিতা কুমারী ফোগাট হলো বাংলাদেশের পালোয়ান শিরিন সুলতানার আদর্শ।

বাংলাদেশে এ রকম খেলায় সাধারণত মেয়েরা আসে না। নানারকম প্রতিকূলতা তার কারণ। তবে শিরিন সুলতানা বহু বাধা পেরিয়ে আজ অনেকদূর এসেছেন। ফুলবাড়ীয়াকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে সম্মানিত করেছেন তিনি।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের পাহাড় অনন্তপুর গ্রামের শিরিন সুলতানা জাতীয় ক্রীড়াবিদ ও নারী উদ্যোক্তা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা এই ক্রীড়াপ্রেমী নারী ১৯৮৮ সালে পাহাড় অনন্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কুস্তিগির এই মেয়েটি দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেজ। বাবা বেঁচে নেই, মা–ই তার অনুপ্রেরণার উৎস।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ আনসারে ব্যাটালিয়ন সৈনিক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আনসারে ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম শুরু হলে সেখানে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় রেহানা পারভীনের নজরে আসেন তিনি। মূলত সেখান থেকেই তার খেলোয়াড়ি জীবনের শুরু। কুস্তীগির হিসেবেই তিনি নিজেকে পরিচিত করেছেন।
 
২০১০ সালে জাতীয় কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তিনি ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণীতে সোনা অর্জন করেন। শুধু ২০১০ সালে নয়, কুস্তিতে জাতীয় পর্যায়ে ২০১১ ও ২০১২ সালেও তিনি  স্বর্ণ জিতেন। দেশের হয়ে  ২০১২ সালে ভারতে ইন্দো-বাংলাদেশ-বাংলা আন্তর্জাতিক রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন শারমিন।  

কুস্তির পাশাপাশি কাবাডিও খেলেন এই রেসলার। বাংলাদেশ আনসারের হয়ে ২০১১ সালে মিজান জাতীয় কাবাডি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। এ ছাড়া ২০১২ সালে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের হয়ে জাতীয় মহিলা ক্লাব লিগে বিজয়ী হয়ে সোনা জেতে শারমিনের দল। প্রশংসা পাওয়ার মত উল্লেখযোগ্য আরও অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার রয়েছে ফুলবাড়ীয়ার গর্ব শিরিন সুলতানার ঝুলিতে।

২০১৩ সালে রেসলিং প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক অর্জন, ২০১৫ সালে জাতীয় মহিলা কাবাডিতে স্বর্ণপদক অর্জন, ২০১০-১১ সালে জাতীয় উশু চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যপদকসহ ২০১৪ সালে স্বর্ণপদক অর্জন, ২০১০-২০১৩ সালে জাতীয় রোইং চ্যাম্পিয়নশিপেও পরপর চারবার স্বর্ণপদক জয় করেন তিনি। এছাড়াও ২১তম কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে অংশগ্রহণ করে ৪র্থ স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই