ওয়ানডেতে টানা দুই জয়ে সিরিজ পাকিস্তানের

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০১৬, ১১:১১ এএম

তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার পর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যায় পাকিস্তানের। সেই আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করেই ওয়ানডে সিরিজে শক্তিশালী রূপে আবির্ভূত হয়েছে পাকিস্তান। পর পর দুই ম্যাচে শতক করলেন বাবর আজম। এই তরুণের ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে আজহার আলির দল। রোববার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। সেটির পেছনে ছুটতে গিয়ে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৮ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। ফলে ৫৯ রানের সহজ জয় পায় পাকিস্তান।

পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে বড় ভূমিকা পালন করেন বাবর আজম। ব্যাক-টু ব্যাক সেঞ্চুরি করা এই তরুণ ব্যাটসম্যান তিন নম্বরে নেমে ১২৬ বলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১২৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তিনি করেছিলেন ১২০ রান।

তৃতীয় উইকেটে বাবরকে নিয়ে ১৬৯ রানের অনবদ্য জুটি গড়া শোয়েব মালিক ৮৪ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে ৯০ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দেন। এছাড়া সরফরাজ করেন ৪৭ বলে ৬০ রান। তাদের সম্মিলিত চেষ্টায় ক্যারিবিয়দের সামনে ৩৩৭ রানের পাহাড় গড়ে তোলে পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেসন হোল্ডার ও আলজারি জোসেফ দুটি করে উইকেট নেন। সুনিল নারিন নেন একটি উইকেট।

পাকিস্তানের করা ৩৩৭ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই জনাথন চার্লসকে (২) হারিয়ে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ আমিরের বলে ইমাদ ওয়াসিমের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ড্যারেন ব্রাভোকে নিয়ে ক্রেগ ব্রাফেট ৮৯ রানের জুটি গড়ে ক্যারিবিয়দের শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তুলতে চেষ্টা চালান।

কিন্তু দলীয় স্কোর ৮৯ থেকে ১২৭ রানে পৌঁছাতেই ক্রেগ ব্রাফেট (৩৯) ও ব্রাভো (৬১) দুজনেই দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের ফাঁদে পড়েন। এসময় জয় থেকে আরো ১২৯ বলে ২০৯ রান দুরে ছিল জেসন হোল্ডারের দল। চতুর্থ উইকেটে দিনেশ রামদিনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট চালান মারলন স্যামুয়েলস। ৫৩ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তারা। এরপরই বিপদজনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভেঙে দেন ওয়াহাব রিয়াজ। ক্যারিবিয় ইনিংসের ৩৮তম ওভারে ওয়াহাবের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন স্যামুয়েলস (৫৭)।

স্যামুয়েলসের বিদায়ের পর দ্রুতই সাজঘরের পথ ধরেন রামদিন (৩৪) ও কার্লোস ব্রাফেট (১৪)। এরপর কিরন পোলার্ড ও জেসন হোল্ডার ক্যারিবিয়দের পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্ঠা করেন। ইনিংসের শেষ দিকে পোলার্ড (১৪) আউট হলেও ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন হোল্ডার। পাকিস্তানের হয়ে ওয়াহাব রিয়াজ ২টি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ইমাদ ওয়াসিম ও মোহাম্মদ আমির নেন ১টি করে উইকেট।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৪০ রানেই দুই ওপেনার আজহার আলি (৯) ও শারজিল খানকে (২৪) হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে শোয়েব মালিকের সঙ্গে ১৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় স্কোরের দিকে নেন বাবর আজম। যদিও দলীয় স্কোর ২০৯ রানে পৌঁছাতেই ব্যক্তিগত ৯০ রানে সুনিল নারিনের বলে ব্রাভোর হাতে ধরা পড়েন মালিক।

কিন্তু এক প্রান্তে আগলে থেকে সরফরাজ আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট করেন বাবর। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন সরফরাজ। চতুর্থ উইকেটে এই জুটি দলীয় স্কোর বোর্ডে আরো ৭৩ রান যোগ করেন। এরমধ্যে চলতি সিরিজে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি তুলে নেন বাবর। শেষ পর্যন্ত ১২৬ বলে ৯ চার ও ২ ছয়ে ১২৩ রানে জোসেফের বলে ব্রাফেটের হাতে ক্যাচ দিয়ে এ ডানহাতি ফেরেন সাজঘরে। ততক্ষণে দলকে তিনি রেখে যান নিরাপদ স্থানে।

বাবর আজম যখন প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তখন ৩১ বলে ২৫ রানে অন্য প্রান্তে ব্যাট করছিলেন সরফরাজ। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৭ চারে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। আগামী মঙ্গলবার আবুধাবিতে সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩৩৭/৫ (আজহার ৯, শারজিল ২৪, বাবর ১২৩, মালিক ৯০, সরফরাজ ৬০*, ইমাদ ১১, রিজওয়ান ৬*; হোল্ডার ২/৫১, জোসেফ ২/৬২, নারাইন ১/৩৯)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৭৮/৭ (চার্লস ২, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট ৩৯, ব্রাভো ৬১, স্যামুয়েলস ৫৭, রামদিন ৩৪, পোলার্ড ২২, কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট ১৪, হোল্ডার ৩১*, নারাইন ১; ওয়াহাব ২/৪৮, আমির ১/৪৯, ইমাদ ১/৬২) 

ফল: পাকিস্তান ৫৯ রানে জয়ী

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই