সেই মুশফিক এই মুশফিক

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭, ০৫:৩৭ পিএম

ঢাকা: ‘ছেলেটা ছোট কিন্তু ওর ক্রিকেট মস্তিষ্ক অনেক বড়’-মুশফিকুর রহীম সম্পর্কে এই বাণিটি দিয়েছিলেন তৎকালীন বাংলাদেশ কোচ ডেভ হোয়াটমোর। ছোটখাটো গড়নের মুশফিককে তিনি মাঠে নামাবেনই। এটা ২০০৫ সালের কথা। দলে যে তখন স্বীকৃত উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ আছেনই। মুশফিকের জায়গা কোথায়? কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে তার ১১৫ রানের ইনিংসটিই মুশফিকের হয়ে আরও জোরালো দাবি তোলে। ২০০৫ সালের ২৬ মে ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে নামিয়ে দেওয়া হল মুশফিককে। যদিও অভিষেকে ১৯ ও ৩ এর বেশি করতে পারেননি।

অভিষেক তো আর সফল ক্যারিয়ারের পূর্বাভাস দেয় না। মুশফিকের বেলায়ও তাই হয়েছে। দিন যত গড়াচ্ছে আরও পরিণত মুশফিককে পাওয়া যাচ্ছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান তিনিই। নিউজিল্যান্ড সিরিজে মুশফিকের চোট তাই ভাবিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্টকে। ভারত সফরে ফিট অধিনায়ককে পাওয়া যাবে তো? তাকে নিয়ে এই হাহাকার কেন সেটা মুশফিক আরেকবার প্রমাণ করে দিয়েছেন। হায়দরাবাদে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৩৮৮ রানে বড় ভুমিকা আসলে মুশফিকেরই।
পথ হারানো বাংলাদেশকে একটু একটু করে পথ দেখিয়েছেন তিনিই। রবিচন্দ্র অশ্বিনের বলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ১২৭। এটা তার ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরি। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করাদের তালিকায় বাংলাদেশে মুশফিকের ওপর দুজন রয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরি সংখ্যা ছয়টি। আট সেঞ্চুরি নিয়ে সবার ওপরে রয়েছেন তামিম ইকবাল।

মুশফিকের পাঁচ সেঞ্চুরিতে বৈচিত্র্য আছে। পাঁচটি দেশে তিনি পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছেন। প্রথম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ঘরের মাঠে ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষেই, চট্টগ্রামে। এরপর মুশফিক প্রথমবার বাংলাদেশের হয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন শ্রীলংকার বিপক্ষে, গলেতে, ২০১৩ সালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের মাটিতে করেছিলেন আরেকটি সেঞ্চুরি। হায়দরাবাদের আগে ওয়েলিংটন টেস্টে খেলেছেন অসাধারণ ১৫৯ রানের ইনিংস।

বাংলাদেশের হয়ে তিনটির বেশি দেশে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান আর কেউ নেই। টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান মুশফিক। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসের পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে পরপর দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। তিনি ফের ২০১৪ সালে পরপর দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করে বসেন। ঘরের মাঠে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজে পরপর দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল হক।

ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকের পার্থক্য হল ম্যাচ সংখ্যায়। ২০০৫ সালে অভিষিক্ত মুশফিকের হায়দরাবাদ টেস্ট ধরলে তিনি খেলেছেন ৫২টি টেস্ট। আর কোহলির টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। এরই মধ্যে তিনি খেলে ফেলেছেন ৫৩টি টেস্ট। একটানা টেস্ট খেলছেন কোহলি। আর মুশফিক সেখানে তের-চৌদ্দ মাসেও টেস্ট পাচ্ছেন না! এত বিরাট ফারাক না হলে নিজের ক্যারিয়ারকে আরও সমৃদ্ধই করতে পারতেন মুশফিক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই/আরআইবি