ফুটবল মাঠ থেকে মঞ্চে ‘নায়করাজ’

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৭, ০৪:৪৪ পিএম

ঢাকা: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প যাঁদের হাত ধরে দাঁড়িয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আব্দুর রাজ্জাক। আর সে জন্যই চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে তিনি ‘নায়করাজ’। কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্রের এই দিকপাল কী আসলেই অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন? যদি উত্তর হয় না। তাহলে কী হতে চেয়েছিলেন?

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাক হতে চেয়েছিলেন একজন ফুটবলার, আরও ভেঙে বললে তুখোড় গোলরক্ষক। তাহলে তিনি কিভাবে অবিসংবাদিত অভিনেতা হলেন। জেনে নেয়া যাক। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের (বর্তমান ভারতের কলকাতায়) টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক।

কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় ফুটবলের নেশা পেয়ে বসেছিল আব্দুর রাজ্জাককে। স্কুল ছুটির পর বেশির ভাগ সময় মাঠেই পাওয়া যেত তাকে। কিন্তু রাজ্জাকের ফুটবলার হওয়ার আশায় বাধ সাধেন শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।

তৎকালীন সময়ে খেলাধুলার পরিবর্তে স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অধিপত্য ছিল। বিশেষ করে নাটক। সেখানে অবশ্য মেয়েরাই বেশি অভিনয় করত। শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ ঠিক করলেন ছেলেদের দিয়ে নাটক করাবেন। ঠিক করা হলো নারী চরিত্রবর্জিত নাটক ‘বিদ্রোহী’। তাহলে এবার হিরো হবেন কে? রাজ্জাক তখন বুঁদ হয়ে আছেন ফুটবল ম্যাচে।

শিক্ষকের নির্দেশ, ‘রাজ্জাককে ধরে নিয়ে আয়!’ এরপর নামিয়ে দেওয়া হলো নাটকে। আর ফুটবল মাঠের তুখোড় গোলরক্ষক হয়ে গেলেন অভিনেতা। অভিনয়ের পাঠ শুরু বাংলা চলচ্চিত্রের দিকপাল রাজ্জাকের। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা। অভিনয় দিয়েই পেলেন ‘রাজ’-এর মুকুট। উপাধি পেলেন ‘নায়করাজ’।

নায়করাজ রাজ্জাক ক্রিকেটেরও ভক্ত। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহীম আর মোস্তাফিজুর রহমানকে তার খুব পছন্দ। নিয়মিত তাদের খেলা দেখেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ এশিয়া কাপ ক্রিকেটে ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখা গেছে তাকে। এফ এম রেডিও ভূমির হটসিটে বসেছিলেন এ বর্ষীয়ান অভিনেতা।
বাংলাদেশ বনাম ভারতের ম্যাচে ধারাভাষ্য দিয়েছিলেন রাজ্জাক।

বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তি অভিনেতা সোমবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। প্রখ্যাত এই অভিনেতার মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষ গভির শোকাহত।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই