বেতন পাচ্ছেন না মারিয়াদের কোচ ছোটন!

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০১৮, ০৯:৫৮ পিএম

ঢাকা: এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ নারী আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দুইবার শিরোপা। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জয় এবং সর্বশেষ হংকংয়ে চার জাতির টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলাররা। দেশের নারী ফুটবলে যত সাফল্য এসেছে সব তার হাত ধরেই। সেই অর্থে তিনিই বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবলে এক সফল কারিগর। আজকের ক্ষুদে তারকা তহুরা, আঁখি, শামসুন্নাহার এবং মারিয়াদের তিলে তিলে তৈরি করেছেন তিনিই। সেই নেপথ্যের কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটন বেতন পাচ্ছেন না তিন মাস ধরে। জানা গেল বাফুফের নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে।  

এ প্রসঙ্গে মেয়েদের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। হয়তো চাকরির শর্তের কারণেই এ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাইলেন না মারিয়াদের প্রধান কোচ। অথচ বিদেশি কোচদের টাকা দিতে কখনোই কোনো কার্পণ্য নেই বাফুফের। সদ্য পদত্যাগ করা জাতীয় দলের প্রধান কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ডের বেতন কিন্তু ঠিকই দেয়া হয়েছে মাসে মাসে। তাহলে দেশি কোচদের বেলায় কেন এমন হচ্ছে?

যারা দেশকে একের পর এক সাফল্য এনে দিচ্ছেন তাদের প্রতি এমন আচরন মোটেও কাম্য নয়। যতই আর্থিক সঙ্কট থাকুক না কেন এ বিষয়টিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নজর দেয়া উচিৎ। তা না হল এক সময় হয়তো কাজের মানসিকতা হারিয়ে ফেলবেন তারা।  

বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সফল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ১৯৯৩ সালে মতিঝিলের টিঅ্যান্ডটি কলোনির হয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। অভিষেকেই টিঅ্যান্ডটি কলোনিকে পাইওনিয়ার ফুটবল লিগে শিরোপা উপহার দেন ছোটন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে যোগ দেন ছোটন। এরপর ২০০৮ সালে জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচ হিসাবে নিয়োগ পান তিনি।

২০০৯ সালে নারী দলের কোচ হিসাবে নিয়োগ পান গোলাম রব্বানী ছোটন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০১৩ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ নারী আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে তার অধীনে তৃতীয় হয় বাংলাদেশ। দুই বছর পর কোচ হিসেবে বাংলাদেশকে শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দেন ছোটন। ২০১৫ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত নারী অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা গেতে বাংলাদেশ। পরের বছর তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত একই আসরে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজের দল।

কোচ ছোটনের অধীনেই ২০১৬ সালেই এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট অর্জন করে বাংলাদেশের মেয়েরা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে দুর্দান্ত দুর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুন্য প্রদর্শন করে বাংলাদেশ দল। ঐ বছর কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতে নেয় মারিয়া মান্দার দল।

সর্বশেষ হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ‘জকি ক্লাব গার্লস ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ইনভাইটেশনাল ফুটবল টুর্নামেন্টে’ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলাররা। এ সবই হয় কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের কোচিংয়ে। সুতরাং এমন সাফল্যের কারিগরকে আগলে রাখা উচিৎ বাফুফের এমনটিই মনে করেন ফুটবলপ্রেমীরা।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই