তামিম-মাশরাফির সৌজন্যে স্বস্তির জয় বাংলাদেশের

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০১৮, ০৮:৪২ এএম

ঢাকা: গায়ানায় ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার মোহাম্মদ আশরাফুল অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন। সেই দলের বেশ কয়েকজন এবারও ছিলেন। এবারও গায়ানা বাংলাদেশকে খালি হাতে ফেরাল না। টেস্ট সিরিজে লজ্জায় অধোবদন হওয়া বাংলাদেশ ৪৮ রানের এক স্বস্তির জয়ই পেয়েছে। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মাশরাফিরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। আগে ব্যাট করে তামিম ইকবালের অপরাজিত সেঞ্চুরির সৌজন্যে বাংলাদেশ তুলেছিল ৪ উইকেটে ২৭৯। পরে বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।  ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থামতে হয়েছে ৯ উইকেটে ২৩১ রান তুলেই।

২৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪১ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ক্রিস গেইল পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন ক্রিস গেইল। তিনি ৮১ ব্যক্তিগত ৪০ রান করে ফিরতেই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। মাঝে হেইটমার ৭৮ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২৩১ অবধি যেত না যদি শেষের দুই ব্যাটসম্যান দেয়াল হয়ে না দাঁড়াতেন। শেষ দুই ব্যাটসম্যান বিশু এবং যোশেফ দু’জনই অপরাজিত ছিলেন ২৯ রান করে। মাশরাফি ১০ ওভারে ১টি মেডেনসহ ৪ উইকেট শিকার করেন। ৩৫ রানে ২ উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন রুবেল হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

এরআগে সাকিব-তামিম দুই বন্ধু মিলে গায়ানায় বাংলাদেশকে স্বাস্থ্যবান স্কোরই উপহার দিয়েছেন। তামিম তাঁর ক্যারিয়ারে দশম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অপরাজিত ছিলেন ১৩০ রানে। কিন্তু সাকিব অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করলেন। বলা ভালো, সেঞ্চুরিটা তিনি মাঠে ফেলে দিয়ে এসেছেন। ৯৭ রানে থাকার সময় যেভাবে দেবেন্দ্র বিশুকে উড়িয়ে মারতে গেলেন সেটা না মারলেও পারতেন। তামিম-সাকিবের যুগলবন্দী এবং শেষের দিকে মুশফিকুর রহীমের বাহারি শটে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৭৯ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। স্কোরবোর্ডে ১ রান উঠতেই এনামুল হক শুণ্য রানে ফিরতেই টেস্ট সিরিজের বিভীষিকা ওয়ানডে সিরিজেও ফিরে আসছে কি না সেই শঙ্কা জেঁকে বসেছিল। কিন্তু ওয়ান ডাউনে সাকিব আল হাসান এসে বন্ধু তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে পরিস্থিতির সামাল দেন। দ্বিতীয় উইকেটে তারা যোগ করেন ২০৭ রান। সেঞ্চুরি কাছে দাঁড়িয়ে বিশুকে অযথা মারতে না গেলে সাকিবও তিন অঙ্কের ঘরে যেতে পারতেন। পারেননি নিজের ভুলেই। ৯৭ রানের আফসোস নিয়েই তাঁকে ফিরতে হলো। ১২১ বলে খেলা সাকিব চার মেরেছেন ছয়টি। এ ইনিংসটি খেলে সাকিব বিসিবি সভাপতিকে একটা বার্তাই দিলেন।

বিসিবি সভাপতি প্রকাশ্যে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না। ৯৭ রানের ইনিংসটি হয়তো সে কথারই জবাব। তবে সাকিব না পারলেও বন্ধু তামিম ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তামিম ব্যাটিং যে বদলে ফেলেছেন সেটি আরও একবার দেখা গেল। এখন আর আগের মতো তাড়াহুড়ো করেন না। বল বুঝে খেলেন। এদিনও তাই করলেন। ইনিংসের শুরু থেকে শেষ অবধি খেলে গেলেন। অপরাজিত ছিলেন ১৩০ রানে। ১৬০ বলে খেলা তামিমের ইনিংসে ছিল ১০টি বাউন্ডারি আর তিনটি ছক্কা।

বাংলাদেশের স্কোর ২৫০ ছুঁতে পারবে কি না এ নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন মুশফিকুর এসে ভোজভাজির মতো সবকিছু পাল্টে দিলেন। রিভার্সসুইপ মেরে রানের খাতা খোলা লিটলম্যান এর পর ব্যাটটাকে তরবারি বানিয়ে একের পর এক চার-ছক্কা মেরে গেলেন। তাঁকে দেখে উদ্বুদ্ধ হলেন তামিমও। শেষের দিকে তারা ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর কতটা নির্দয় ছিলেন সেটি শেষের দুই ওভার দেখলেই বোঝা যায়। এই দুই ওভারে বাংলাদেশ রান তুলেছে ৪৩। ১১ বলে ৩০ রান তুলে থেমেছেন মুশফিক। তিনটি বাউন্ডারির পাশাপাশি ছক্কা মেরেছেন দুটি। ৫২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়েছেন দেবেন্দ্র বিশু।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই