তামিমের দেশপ্রেম আর মুশফিকের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা বধ

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮, ১২:৪৮ এএম
ছবি: এএফপি

ঢাকা: বৃথা যায়নি তামিম ইকবালের অনন্য দেশপ্রেমেরে উজ্জল দৃষ্টান্ত। বৃথা যায়নি মুশফিকুর রহীমের লড়াকু সেঞ্চুরি এবং মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব। শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ।

ভাঙা হাত নিয়ে ব্যাট করে তামিম ইকবাল যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সেটি নজিরবিহীন। সঙ্গে মুশফিকুর রহীমের যোদ্ধা মনোভাব। এই দুইয়ে মিলে বাংলাদেশ টস জিতে আগে ব্যাট করে সবকটি উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২৬১ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কাকে শুরুতেই ধাক্কা দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে তিনি কুশল মেন্ডিসকে শূন্য রানে এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলে।

প্রথম ওভারে ১৩ রান দেওয়া অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা পরের ওভারে এসে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন ওপেনার উপুল থারাঙ্গাকে (২৭)। এরপর ইনিংসের পঞ্চম ওভার করতে এসে মাশরাফি এলবিডব্লু করে বিদায় করেছেন ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে(০)। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাশরাফির লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে কুশল পেরেরাকে সাজঘরে পাঠান এই অফ স্পিনার। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ২৪ বলে ১১ রান করেন এই শ্রীলঙ্কান মারমুখী এই ব্যাটসম্যান।

৩৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর শানাকাকে নিয়ে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন ম্যাথুস। কিন্তু অধিনায়কের ভুল বোঝাবুঝিতে নন স্ট্রাইকে ফিরতে গিয়ে সাকিব আল হাসানের থ্রোতে মিরাজ রান আউট করেন শানাকাকে (৭)। পরের ওভারে ইনিংসে প্রথম বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বলেই ম্যাথুসকে ১৬ রানে এলবিডাব্লিউ করেন রুবেল।

মিরাজের পরের ওভারে পয়েন্টে রুবেল ধরেন থিসারা পেরেরার ক্যাচ। মুস্তাফিজ তার চতুর্থ ওভারে সুরাঙ্গা লাকমলকে ২০ রানে বোল্ড করেছেন। লাসিথ মালিঙ্গাকে নিয়ে বাংলাদেশের এই উইকেট উৎসবে কিছুটা বিরতি টেনেছিলেন দিলরুয়ান পেরেরা।

তবে মোসাদ্দেক হোসেন তার দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে তাকে ২৯ রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানান। পরের ওভারে আমিলা আপোনসোকে বদলি ফিল্ডার নাজমুলের ক্যাচ বানান সাকিব। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের একমাত্র উইকেট শিকারের মধ্যে দিয়ে ১২৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। আর তাতেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম জয়ের দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে বাংলাদেশের ইনিংস ছিল মুশফিক আর মিঠুনময়। ২ রানে ২ উইকেট হারানোর পরপরই হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। তখন কেউ ভাবেননি বাংলাদেশ ২৬১ রান অবধি যেতে পারবে। এটি সম্ভব হয়েছে মুশফিক-মিঠুনের তৃতীয় উইকেটে ১৩২ রানের সৌজন্যে। যেখানে মিঠুনের অবদান ৬৩। এটি মিঠুনের ক্যারিয়ার সেরা এবং একমাত্র ফিফটি। মুশফিকও ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস।

তবে মুশফিক এ ইনিংস খেলতে পারতেন না যদি তামিম মোস্তাফিজ আউট হওয়ার পর ভাঙা হাত নিয়ে না নামতেন। ৪ বলে খেলে ২ রান করেছেন তামিম। তারপরও এই ইনিংসটাকে বলা হচ্ছে বীরত্বপূর্ণ। কারণ তামিম উইকেটে না থাকলে মুশফিক দলের স্কোর ২৬১ তে নিয়ে যেতে পারতেন না। তাঁর নিজের নামের পাশেও ১৪৪ রান যোগ হতো না। ১৫০ বলে ১১ বাউন্ডারি আর চার ছক্কায় এই ইনিংস খেলেন মুশফিক। ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সফল বোলার এক বছর পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপা লাসিথ মালিঙ্গা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই