সিলেটে অচেনা বাংলাদেশ!

  • রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ, | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০১৮, ০৬:২৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সকাল সবসময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না। এর প্রমাণ মিলল আজ আরও একবার। প্রথম দিনের খেলা শেষে পেসার আবু জায়েদ জিম্বাবুয়েকে ৩২০ রানের মধ্যে বেঁধে ফেলার কথা বলেছিলেন। তাঁর কথার চেয়েও তাইজুল ইসলাম বেশিই করে দেখালেন চতুর্থবার পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়ে। আর তাতে ২৮২ রানেই থেমে গেল জিম্বাবুয়ের ইনিংস।

লাঞ্চের আগে এক ওভারই খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ২ রান। সবাই ভেবেছিলেন দুপুরের খাবারের পর আরাম আয়েশেই ব্যাট করবেন ইমরুল কায়েস আর লিটন দাস। কেউ কেউ তো মনের কোনে এই দুজনের জন্য সেঞ্চুরির আলপনাও এঁকেছিলেন। ওয়ানডে সিরিজে দুজন যেভাবে খেলেছিলেন তাতে আঁকাটা বাড়াবাড়ি ছিল না।

কিন্তু একি! ঢেকুর তোলার আগেই যে টপাটপ উইকেট চলে যাচ্ছে। ১৯ রানে টপ অর্ডারের ৪ উইকেট চলে গেলে আর কী থাকে! ৫০-এর আগে নেই ৫ উইকেট। শেষ অবধি কাঁপতে কাঁপতে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল ১৪৩ রানে। কোনওমতে জিম্বাবুয়ের অর্ধেক রান পেরোতে পেরেছে বাংলাদেশ। ফলে ১৩৯ রানের বড়সড় লিডই পেয়ে গেল সফরকারীরা।
অথচ দিনের শুরুটা কী চমৎকারই না করলেন তাইজুল-নাজমুলরা। ২১ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ের শেষ ৫ উইকেট ফেলে দিলেন।

নিজেরা ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের শেষের বিভিষীকাই যেন ফিরল বাংলাদেশ ইনিংসে। ১২ রানের মধ্যে নেই দুই ওপেনার লিটন-ইমরুল। ১৯ রানের মধ্যে চলে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ। টেস্ট অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন খালি হাতে। টেন্ডাই চাতারা যেন হঠাৎ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য হয়ে উঠলেন ত্রাস।

মনে হচ্ছিল, এ যাত্রায় দলকে উদ্ধার করতে পারবেন মুমিনুল। কোথায় কি, তিনি ১১ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। তখন মহাবিপর্যপয়ে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম আর আরিফুল হক আশা জাগিয়েও বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হলেন। ৭৮ রানে যখন ব্যক্তিগত ৩১ রানে ফেরেন মুশফিক তখন ঘোরতর অনামিশা বাংলাদেশ শিবিরে। ‘কে দেবে আশা কে দেবে ভরসা’ এই অবস্থা।

রংপুরের অলরাউন্ডার আরিফুল হক ঘরোয়া ক্রিকেটের ফর্মটাই টেনে আনলেন বটে, কিন্তু তাঁকে সহযোগিতা কেউ আর করতে পারলেন না। একা একা তো আর ব্যাটিং চালিয়ে নেওয়া যায় না। এক প্রান্তে আরিফুল দাঁড়িয়ে থেকে সতীর্থদের যাওয়া আসা দেখলেন। যা একটু সঙ্গ দিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ (২১)। বাকি দুজন তাইজুল (৮) ও নাজমুল (৪) ফিরলেন সিকান্দার রাজার শিকার হয়ে। যেখানে একটি রানও মহামূল্যবান সেখানে শেষের ব্যাটসম্যান আবু জায়েদ (০) ফিরলেন রান আউট হয়ে। আর তাই অভিষেক টেস্টে ফিফটি পেতে পেতে পেলেন না আরিফুল। ৯৬ বল খেলে অপরাজিত রইলেন ৪১ রান করে। বাউন্ডারি মেরেছেন তিনটি।

জীবনের প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বোলারদের খেলতে আরিফুলের সমস্যা না হলে বাকিদের কেন হলো? রাতারাতি কি জিম্বাবুয়ের বোলাররা দক্ষিণ আফ্রিকার বোলার হয়ে গেল যে তাদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হলো? কেনই বা মাত্র চার জন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের নাগাল পেলেন আর বাকিরা পেলেন না? নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আট থেকে আশি, সবার মাঝে। মাহমুদউল্লাহর কাছে এসবের উত্তর আছে?

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই