বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরের তালিকায় আবারও উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। শনিবার সকাল ৮টায় বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার প্রকাশিত এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, ১৮০ স্কোর নিয়ে ঢাকা রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম দূষিত শহর হিসেবে।
বায়ুতে অতিক্ষুদ্র কণিকা, বিশেষত পিএম ২.৫ মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে বর্তমানে ঢাকার বায়ুতে ক্ষতিকর কণিকার পরিমাণ প্রায় ২০ গুণ বেশি।
সবচেয়ে দূষিত এলাকা: মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং
ঢাকার মধ্যে বায়ুদূষণের দিক থেকে সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায়, যেখানে একিউআই স্কোর দাঁড়িয়েছে ২২৭—যা "খুবই অস্বাস্থ্যকর" পর্যায়ের আওতাভুক্ত।
তালিকায় এর পরেই রয়েছে কল্যাণপুর, গোড়ান, গুলশানের গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বেচারাম দেউড়ি, মাদানি সরণির বেজ এজওয়াটার আউটডোর, শান্তা ফোরাম।
এসব এলাকায় দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
কীভাবে বোঝা হয় বাতাসের মান?
আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, বায়ুর মান মূল্যায়নের স্কেল ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর।
আজকের স্কোর অনুযায়ী, ঢাকার বাতাস সাধারণ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় এই ধরনের দূষিত পরিবেশে থাকলে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, হাঁপানি, ফুসফুসের জটিলতা, এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং যাদের আগে থেকেই শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা আছে—তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে।
দূষণ কমাতে সরকারি পর্যায়ে কঠোর পদক্ষেপ, যানবাহন ও নির্মাণকাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ, এবং সবুজায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত সচেতনতা যেমন মাস্ক ব্যবহার, বাড়ির আশেপাশে গাছ লাগানো ও অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলার কথাও বলা হচ্ছে।
এম