• ঢাকা
  • রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ফুলবাড়িতে তুলা চাষে নিজেদের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা


দিনাজপুর প্রতিনিধি মার্চ ৯, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম
ফুলবাড়িতে তুলা চাষে নিজেদের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

তুলা চাষে ভাগ্য বদল

দিনাজপুর: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনাময় ফসল হিসেবে তুলা চাষে ভাগ্য বদলের ব্যাপক আশার আলো দেখা দিয়েছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এ অঞ্চলের কৃষক। কৃষিতে হাইব্রিড কার্পাস জাতের তুলা চাষ একটি নতুন সম্ভাবনা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ দিকে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর তুলার দাম মণ প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে এখন ভাগ্য বদলের স্বপ্ন ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি সরকারি ভাবে সম্প্রসাারিত তুলা চাষ প্রকল্পের বিভিন্ন প্রণোদনা ও উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পরামর্শে চলতি মৌসুমে তুলা চাষ এবং ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। 

উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর এলাকার কৃষক মতিলাল জানান, উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরণের ঋণ সহায়তা পেয়ে তিনি ৫বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেন। এ বছর ফলন ও তুলার দাম ভালো থাকায় অন্য বছরের তুলনায় তিনিসহ অন্য তুলা চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। একই এলাকার তুলা চাষি কৃষক মোফাজ্জল জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেন। প্রতি বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে তার খরচ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা । কৃষকের জমিতে তুলা চাষ করার জন্য সার, বীজসহ সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা অফিসেই বহন করে। তুলা উন্নয়ন অফিস কৃষকদের আগাম সার, বীজ ও ঋণসহ বিভিন্ন ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন। তুলা বিক্রি করেই তা পরিশোধ করতে হয়। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় হরিশ বর্মণ, নজরুল ইসলামসহ ওই এলাকার প্রায় ২০ থেকে ২৫জন কৃষক তাদের আবাদী জমিতে কার্পাস জাতের তুলার চাষ করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়েছেন।

 কৃষকরা বলছেন, এ বছর সরকারি ভাবে তুলার দাম বৃদ্ধি করে প্রতিমণ তুলার মূল্য ৩ হাজার ৬০০ টাকা করায় তারা অন্য বছরের তুলনায় বেশী লাভবান হচ্ছেন। এরকম দাম থাকলে তুলা চাষিরা লাভবান হবেন এবং অন্য কৃষকরাও তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। 

উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট অফিসার মোঃ আবু জুয়েল জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা যাতে উৎপাদিত তুলার ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য তুলার মূল্যও বাড়িয়েছে সরকার। অন্য ফসলের চেয়ে তুলা চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে তুলা চাষে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। এ বছর এ উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে কার্পাস হাইব্রিড জাতের তুলার চাষ হয়েছে। এবার ফলন ভালো হওয়ায় বিঘা প্রতি (৫০ শতাংশে) ১৮ থেকে ২০ মণ করে তুলা উৎপাদন হয়েছে। ইতিমধ্যে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে তাদের উৎপাদিত তুলা ক্রয় শুরু হয়েছে।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড ফুলবাড়ী ইউনিটের প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় তুলা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার ৩৫জন কৃষককে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে হাইব্রিড ও উচ্চফলনশীল জাতের তুলা বীজ, সার,কীটনাশকসহ আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় তুলার উৎপাদন বেশী হয়েছে। তুলার চাষ থেকে বিক্রি পর্যন্ত কৃষকদের সকল সহযোগীতা করেছে স্থানীয় তুলা উন্নয়ন বোর্ড। চাষিরা বলছেন, কম খরচে তুলা চাষে বেশী লাভবান হওয়ায় তারা এই তুলা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন।

সোনালীনিউজ/এএস/এসআই

Wordbridge School
Link copied!