• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাংনীতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত 


আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মেহেরপুর আগস্ট ২৬, ২০২২, ০৩:১৮ পিএম
গাংনীতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত 

মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত ভবানীপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে ৮৮ শতাংশ জমির উপর সুন্দর পরিবেশে গড়ে ওঠা স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। 

‘শিক্ষার জন্য এসো, সেবার জন্য বেরিয়ে যাও’ এই মূল মন্ত্রে এলাকার শিক্ষার আলো জ্বালানোর লক্ষ্যে ২০০০ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত বিবিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষালাভ করছে। অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় ইতোমধ্যেই স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকমন্ডলীদের আন্তরিকতায় নিজেদের অর্থায়নে পৃথক চাটাই ঘেরা টিনসেড নির্মাণ করে কোনরকমে পাঠদান করানো হচ্ছে। টিনের ছাউনি দেয়া ছোট ছোট কক্ষে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ঠাসাঠাসি করে বসিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে। 

অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় বিদ্যালয়টির শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকমন্ডলী। 

বর্মমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের সদিচ্ছায় দীর্ঘ ২২ বছর পর হলেও বিদ্যালয়টি ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক জামিল হোসেনসহ শিক্ষকমন্ডলীর আন্তরিককতায় নিজস্ব অর্থায়নে চাটাই ঘেরা টিনসেডের একটি শেণিকক্ষ নির্মাণ করে কোন রকমে পাঠদান করানো হচ্ছে শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও  রয়েছে বেঞ্চ ও য়োর টেবিলের সমস্যা। বিদ্যালয়ের টিনসেডের কক্ষে জানালা না থাকায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকতে পারে না। ফলে প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীরা স্বাচ্ছন্দে ক্লাস করতে পারে না। বেশীরভাগ কক্ষে ছাউনির টিন ছিদ্র হয়ে গেছে। বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি হলেই ক্লাস নেয়া সম্ভব হয় না।

জায়গা সংকুলান না হওয়ায়  বিদ্যালয়ে  মেয়েদের জন্য  তেমন প্রশস্ত কমনরুম নেই।  এছাড়াও ইনডোর গেম খেলার জন্য তেমন উপকলন বা স্পেস নাই। বিদ্যালয়ে সুদক্ষ, সুযোগ্য ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রধান শিক্ষকের আদর্শে অনুপ্রাণিত ১৮ জন শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারীদের বসার তেমন কোন কক্ষ নেই। তবুও একঝাঁক সুদক্ষ শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ ও আন্তরিকতায়  বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকদের মন কেড়েছে। 

শিক্ষার পরিবেশ ও পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট হয়ে আশে পাশের গ্রামগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা  বিবিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। শিক্ষা ছাড়াও খেলাধুলা, বিভিন্ন কালচারাল প্রতিযোগিতাতেও সাফল্য অর্জন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

সরেজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়ের নানা সমস্যা চোখে পড়েছে। অসংখ্য ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। 

৬ষ্ঠ শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, আমরা ক্লাসে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ঠাসাঠাসি করে বসে ক্লাস করে থাকি। এক বেঞ্চে ৫/৬ জন করে বসতে হয়। গরমে কষ্ট হয়। শিক্ষক স্বাচ্ছন্দে পাঠদান করাতে পারেন না। আমরা একটি সুন্দর বিল্ডিং চাই। এমনটাই দাবি সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের।
  
আলাপচারিতায় প্রধান শিক্ষক জামিল হোসেন জানান, ‘অজা পাড়া গাঁয়ে পিছিয়ে পড়া  জনপদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আমরা কয়েকজ বন্ধু মিলে প্রতিষ্ঠিত করেছি এই প্রতিষ্ঠিানটি। অনেক বাঁধা বিপত্তি কাটিয়ে আজ বিবিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি  একটি প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাঙ্গন হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। জীবন যৌবনের সবটুকু নিঃশেষ   করে দিয়ে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ না করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমাদের স্বপ্ন। জীবনের বেশীরভাগ সময় পার হয়ে গেছে এই স্বপ্ন পূরণে।’ 

‘মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে যেতাম। তবুও মনে শক্তি সাহস পেতাম এই ভেবে যে আমি একটি মহান পেশায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি। শিক্ষা বান্ধব সরকারের সদিচ্ছায় স্কুলটি এমপিও ভুক্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি এমপি মহোদয়ের সুদৃষ্টিতে অবিলম্বে বিবিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো নির্মিত হবে। এমপি মহোদয়ের মহানুভবতা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। আমরা সেই প্রত্যাশা করি। অবকাঠামো নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’ 

এ ব্যাপারে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ গড়তে এবং শ্রেণি সংকট সমস্যা সমাধানকল্পে অবিলম্বে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, শিক্ষা প্রকৌশলী , জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তথা আমাদের আপনজন গাংনী শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের রুপকার এমপি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় সচেতনমহল।    

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!