• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৩


মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ১১:৫০ এএম
ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৩

তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)

চট্টগ্রাম: মিরসরাইয়ে যুবলীগ কর্মী শহিদুল ইসলাম আকাশ (২৮) হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-৭ সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে প্রধান আসামি মামুনকে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দুই জন মুকেশ চন্দ্র দাশ ও ইকবালকে চাঁদপুর জেলার পুরান বাজার হতে রাত ৮ টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।

নুরুল আবছার বলেন, ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মামুনের ছোট ভাই আফজাল হোসেনকে আকাশ কুপিয়ে হত্যা করে। তখন মামুন ও তার ভাই ইকবাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলায় জেল হাজতে ছিলেন। মামুন গত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পেয়ে মামুন তার ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার সহযোগী মোতালেব, রাজু, নিজাম, হামিদ ও মুকেশসহ হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী গত ১৯ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পাওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় যুবলীগ কর্মী আকাশকে কুপিয়ে হত্যা করেন। মূলত ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে জামিনে বের হয়ে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী শহীদুল ইসলাম আকাশকে কুপিয়ে খুন করা হয়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আকাশ-মামুন এক সময় খুব কাছের বন্ধু ছিল। বারইয়ারহাট কেন্দ্রিক এক রাজনৈতিক নেতার গ্রুপ করতেন তারা। ২০১৫ সালে মাদক ও গাছ ব্যবসা নিয়ে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তখন মামুন আকাশকে হত্যা চেষ্টা করে। তখন আকাশ অনেক দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ মামলায় দীর্ঘ দিন কারাগারে ছিলেন মামুন। মামুন জামিনে বের হওয়ার পর থেকে তাদের দ্বন্দ্ব আরো প্রকাশ্যে আসে। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর পরিকল্পিবভাবে শহিদুল ইসলাম আকাশকে খুন করা হয়। ঘটনার পর আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেফতার আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট এলাকায় যুবলীগ কর্মী শহীদুল ইসলাম আকাশকে হুমায়ুন রশিদ মামুন এবং তার সহযোগীরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আকাশের দোকানে এসে আকাশকে গালাগাল করে। আকাশ প্রতিবাদ করলে মামুন তাকে দোকানের বাইরে নিয়ে কিরিচ দ্বারা মাথার পেছনে জখম করেন। সাথে সাথে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামি মোতালেব তার হাতে থাকা ধামা দিয়ে আকাশের গলায় এবং থুথনীতে আঘাত করেন। একপর্যায়ে আকাশের বাবা ছেলেকে বাঁচানোর জন্য ছুটে আসলে মামুন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন এবং তাকে হুমকি দেন যদি নড়াচড়া করে তবে তাকেও জবাই করে দেবেন। এরপর তাদের সাথে থাকা ছুরি, কিরিচ ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আকাশকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয় লোকজন আসলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের বোন নাজমা আক্তার ২১ সেপ্টেম্বর জোরারগঞ্জ থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এর আগে এই মামলার পাঁচ নম্বর আসামি হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।

সোনালীনিউজ/এমএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!