• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে মঠ দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ


রাজশাহী ব্যুরো মার্চ ২৫, ২০২৩, ০১:৩৭ পিএম
রাজশাহীতে মঠ দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

রাজশাহী: রাজশাহী নগরীর সপুরা এলাকায় একটি প্রাচীন মঠ দখল করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় পৌনে তিনশো বছর আগে নির্মিত এসব কিছুদিন আগে সংস্কার করা হয়েছিলো। তবে এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একজন প্রকৌশলীও মঠের জায়গা দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসাী জানায়, রাজশাহী মহানগরীর সপুরা এলাকায় এই মঠের চারপাশ দখল করে ফেলেছেন পাউবোর রাজশাহীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাজিমুল ইসলাম। কয়েকদিন ধরে সেখানে তিনি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কয়েকদফা গিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছে। তারপরও কাজ বন্ধ হয়নি। দ্রুত নির্মাণ এগিয়ে নিতে রাতেও সেখানে কাজ চলছে।

হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ১৭৪৫ সালের পরে মুর্শিদাবাদ থেকে রাজশাহী এসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরাই বিরাট বিরাট পুকুরসহ জায়গা কিনে পুকুরপাড়ে মঠগুলো নির্মাণ করেছিলেন। এসব মঠে তাঁরা নিজেদের ধর্মচর্চা করতেন। পরবর্তীতে প্রতুতত্ব অধিদফতর মঠগুলো সংরক্ষিত ঘোষণা করে। সবশেষ ২০১৮ সালের দিকে ভারতীয় সরকারের অর্থায়নে মঠগুলোর সংস্কার কাজ করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সপুরা এলাকার মঠটি ঠিকমতো সংস্কারও করতে দেননি প্রকৌশলী নাজিমুল ইসলাম ও তাঁর ভাই কলেজ শিক্ষক ইয়াসিন আলী। মঠের গম্বুজের পাশে বারান্দার একটুও কাজ করতে দেননি তারা। ঠিকাদার শুধু সিঁড়ি এবং গম্বুজটারই সংস্কার করতে পেরেছিলেন। এখন মঠের চারপাশ দখলে নিয়ে ভবন তুলছেন প্রকৌশলী নাজিমুল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঠের চারপাশ টিন দিয়ে ঘিরে ভেতরে কাজ চলছে। মঠের গম্বুজের গা ঘেঁষে ভিত কাটা হয়েছে। শ্রমিকেরা জানান, এখানে ছয়তলা ভবন উঠবে। গম্বুজ ঘেঁষে ভিত খোড়ার কারণে মঠটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানান, নাজিমুল ইসলামের জমি সপুরা মৌজার ৪৪৮০ নম্বর দাগে। মঠও আছে একই দাগে। তবে নকশায় মঠের জায়গা চিহ্নিত করা আছে। এখন একই দাগে জায়গা বলে মঠের জায়গাটুকুও নিয়েছে প্রকৌশলী। তবে নাজিমুল তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মঠের কোন জায়গা দখল করছি না। নিজের জায়গায় ভবন তুলছি।

প্রতুতত্ত্ব অধিদফতর রাজশাহীর সহকারী কাস্টোডিয়ান শাওলি তালুকদার বলেন, কোন মঠের জায়গা দখল করে কোথায় কাজ চলছে তারা সেটি না জানলে ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। এলাকার যে কেউ তাদের কাছে অভিযোগ করলে তারা গিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, ‘হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন সেন আমাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন যে, মঠের জায়গা দখল করে ভবন তোলা হচ্ছে। এরপর কয়েকদফা পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছি। আর তপন সেনকে পরামর্শ দিয়েছি, তারা যেন আদালতে একটা মামলা করেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়গুলো পুলিশের না। তাঁরা আদালতে মামলা করলে পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে।’

সোনালীনিউজ/জেএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!