• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইটভাটার মাটিতে প্রাণ গেল স্কুলশিক্ষিকার


নড়াইল প্রতিনিধি মে ১৭, ২০২৩, ১০:৫০ এএম
ইটভাটার মাটিতে প্রাণ গেল স্কুলশিক্ষিকার

নড়াইল: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মানিকগঞ্জ এলাকায় ইটভাটার মাটি পড়ে পিচ্ছিল সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন স্কুলশিক্ষিকা শিল্পী খানম (৫০)। মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে তার মৃত্যু হয়। এ সময় পাঁচ দাখিল পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন। নিহত স্কুলশিক্ষিকা লোহাগড়ার তেঁতুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাবু মিয়ার  আপন বোন। গত সোমবার সন্ধ্যায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টির পর সড়কে পড়ে থাকা ইটভাটার মাটি পিচ্ছিল হয়ে ওঠে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে স্বামীর মোটরসাইকেলযোগে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের মানিকগঞ্জ এলাকায় কাঁদামাটির পিচ্ছিল সড়কে পড়ে যান স্কুলশিক্ষিকা শিল্পী খানম। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকের ধাক্কায় মাথা ফেটে যায় ওই স্কুলশিক্ষিকার। এ দুর্ঘটনায় ইজিবাইকে থাকা পাঁচ দাখিল পরীক্ষার্থী আহত হয়। আহত পরীক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। 

আহত শিল্পী খানমকে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। নিহত শিল্পীর স্বামী লাহুড়িয়ার হাফেজ আব্দুল করিম একাডেমির প্রধান শিক্ষক কাজী মহিউদ্দিন। তাদের তিন ছেলে সন্তান রয়েছে। স্কুলশিক্ষিকার মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

এদিকে ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ জানান, নড়াইলের বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল সড়কসহ বেশির ভাগ গ্রামীণ পাকাসড়কে সারাবছরই ইটভাটার মাটি পড়ে সড়কগুলো দেখতে অনেকটা কাঁচা সড়কের মতো মনে হয়। ট্রাক, ট্রলিসহ ইটভাটার মাটি টানার বিভিন্ন যানবাহন থেকে প্রতিদিন পাকাসড়ককে কাঁচামাটি পড়তে থাকে। এই সড়কগুলোতে একটু বৃষ্টি হলেই ঘটে যায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে প্রতিবছরই বেশ হতাহতের ঘটনা ঘটে। 

ইটভাটার মাটি পড়ে নড়াইলের বেশির ভাগ সড়কেরই ভয়ংকর অবস্থা হলেও কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোনো নজর নেই যেন। সড়ক ও জনপথ এবং এলজিইডি সড়ক নিরাপত্তার সাইনবোর্ড টানিয়েই যেন দায়শোধ করেছে। এমনটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সড়ক অনিরাপদ হলে জেল-জরিমানার কথা সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা থাকলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। ফলে ইটভাটা ছাড়াও বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত মাটি পাকাসড়কে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছেই। এ ভয়ংকর ফাঁদ দেখার কেউ নেই যেন! অনেকে অভিযোগ করেন-আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে লক্কড়-ঝক্কড় ট্রাক, ট্রলিসহ অন্য যানবাহনে করে ইটভাটা মালিকরা সারাবছর মাটি টানেন। ফলে এসব যানবাহনের পাটাতন দিয়ে পুরো সড়কে মাটি পড়তে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ওভারলোডের কারণেও যানবাহন থেকে মাটি উপচে পড়ে পাকাসড়ক কাঁচা সড়কের অবস্থা হয়ে যায়। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। আর এর বেশির ভাগ শিকার মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যান, বাইসাইকেল, প্রাইভেটকারসহ ছোট যানবাহনগুলো। এছাড়া সড়কের ওপর ধানের খড়, গম, সরিষা ও ডাল জাতীয় ফসলসহ বিভিন্ন মওসুমি ফসল শুকানোর কারণে সড়কগুলো দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে থাকে। 

সোনালীনিউজ/এফকে/এসআই

Wordbridge School
Link copied!