চলাচলের রাস্তা বন্ধ, বিপাকে ২৬টি পরিবার

যশোর: যশোরের অভয়নগর উপজেলায় চলাচলের রাস্তা বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়ায় বিপাকে পড়েছে ২৬টি পরিবারের দেড় শতাধিক মানুষ। দেড় কিলোমিটার ঘুরে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নে গোবিন্দপুর গ্রামের বিলাস মন্ডলের ছেলে আকাশ মন্ডল ওই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ২৬টি পরিবারের যাতাযাতের একটি রাস্তা বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন এক ব্যক্তি। ফলে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। 

অভিযোগে বলা হয়, সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আকাশ মন্ডলের বাড়ির সীমানার কিছুটা রাস্তার মধ্যে পড়ে আছে। স্থানীয় মতুয়া সম্প্রদায়ের ২৬টি পরিবার ওই রাস্তা দিয়ে গোবিন্দপুর বাজারে যাতায়াত করেন। রাস্তাটি দিয়ে বিশ্বাসপাড়ার বেশ কিছু পরিবারের দেড় শতাধিক মানুষ চলাচল করেন। মাঠের ধান, পাট, সবজিসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য নিয়ে বাজারে ও বাড়িতে নিয়ে যান এলাকাবাসী। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, আকাশ মন্ডল ৩১ শতাংশ জমিতে বসবাস করেন। যার মধ্যে সাড়ে ২৫ শতাংশ জমি খতিয়ানভুক্ত। বাকিটা খাসের জমি। যা তিনি দখল করে আছেন। সম্প্রতি আকাশ মন্ডল ও তার পরিবার ওই রাস্তা দিয়ে সকলকে চলাচল করতে নিষেধ করে দিয়েছে এবং রাস্তার পূর্ব-পশ্চিম ও দুটি পাশেই বাঁশ ও সজনের ডাল দিয়ে ঘিরে বেড়া দিয়েছে। 

ভুক্তভোগী গুরুদাসী বিশ্বাস, মিতা বিশ্বাস, মিনা বিশ্বাস, প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, তাপস বিশ্বাস, অশোক বিশ্বাস, মিতালী বিশ্বাস বলেন, আকাশ মন্ডল ৪০ ফুট জায়গা পাবে। কিন্তু বাপ দাদারা দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাতে চলাচল করে থাকেন। আমরাও চলাচল করে থাকি। এই রাস্তাটি ঘিরে রাখার কারনে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। এ রাস্তা বন্ধ করে সড়কের ওপরের বাঁশের বেড়া ও গোবরের বড়ে রেখেছেন এবং কলাগাছ লাগিছেন। সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান পারাপার করা যাচ্ছে না। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আকাশ মন্ডল বলেন, আমার জায়গা দিয়ে কাউকে যেতে দেয়া হবে না। খাস জমির ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, সবার পাশে খাস জমি আছে আমার পাশেও আছে, আমি সেগুলো ভোগ দখল করে খাই।

ইউপি সদস্য শিপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আকাশের জমির ভেতরে ৩ শতক খাস জমি আছে। এলাকাবাসীদের জন্য এটি সমন্বয় করে নিলে ভালো হতো। এমপির বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকার কাজ হবে বালি ও ইট চলে এসেছে। আকাশ মন্ডলের কারণে কাজ শুরু করতে পারছি না। এর আগে সাবেক মেম্বার সুনীল মন্ডল ৪০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে এই রাস্তায় মাটি তুলেছেন।

সুন্দলী ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল জানান, দেড় শতাধিক লোকের একমাত্র সড়ক কোন কারণে বন্ধ করা যাবে না। বৃহৎ স্বার্থের জন্য অল্প একটু ছাড় দিতে হবে। আকাশ মন্ডলকে অনেকবার বোঝানো হয়েছে। তার জমির ভিতরে অনেক খাস জমি আছে। সেই স্বার্থে এলাকাবাসীর জন্য এটুকু তাকে করতে হবে। বরাদ্দকৃত ইট ও বালি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম আবু নওশাদ জানান, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে মানুষের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। ওইখানে যদি খাস জমি থাকে তাহলে আমাদের পক্ষে মীমাংসা করা সহজ হবে।

সোনালীনিউজ/এসআই