• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল


আলমাস আলী, ঈশ্বরদী মার্চ ৯, ২০২৪, ১১:১৫ এএম
গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল

ছবি : প্রতিনিধি

পাবনা: দেশে উচ্চফলনশীল জাতের বোম্বাই লিচু আবাদের অন্যতম এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদীতে এবার গাছে গাছে মকুলের সমারোহ। বছর ঘুরে এসেছে বসন্ত। প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রংয়ের ছোঁয়া। বসন্তের আগমনে শীত বিদায়ের লগ্নে প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে। হিমেল পরশে বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠছে নবীন জীবনের ঢেউ। নীল আকাশে সোনা ঝরা আলোকের মতই হৃদয় আন্দোলিত। চারদিকে সবুজের সমাহার। ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাবনার ঈশ্বরদীতে সবুজ পাতার ফাঁকে প্রতিটি লিচুর বাগানে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে নাক ফুলের মতো লিচুর সোনালি মুকুল। এরইমধ্যে ভালো ফলন পাওয়ার আশায় কৃষকরা লিচু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।

আবহাওয়া অনুকূল, উর্বর মাটির কারণে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষিতে বেশ সমৃদ্ধ। লিচু উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ লাভ করায় এ উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের মানুষ এখন লিচু চাষের দিকে ঝুঁকেছে। মাঘ মাসের শেষ থেকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে লিচুর মুকুল আসতে শুরু করে। ফাল্গুনের শেষে লিচুর সোনারঙা এসব মুকুল ফোটে। চৈত্রের শুরুতে ফুলগুলো কুঁড়িতে রূপ ধারণ করে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জৈষ্ঠ্যমাসের শুরুতে এসব গাছে গাছে টকটকে লাল বোম্বাই লিচুর দেখা মিলবে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের লিচু চাষ হয়ে থাকে। দেশের মোট চাহিদার প্রায় অধেক লিচু ঈশ্বরদীতে উৎপাদন হয়। এটা উপজেলা পযায়ে সর্বোচ্চ লিচু উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত।

সরজমিনে লিচুর এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, বাগানগুলোতে লিচুর মুকুল আসার আগে থেকে লিচু চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছের গোড়ায় ড্রেন করা, পানি দেওয়া, স্প্রে করা সহ লিচু গাছের পরিচর্যা শুরু হয়ে গেছে। কিছুদিন পর ফুল ফুটবে এবং পরে তা থেকে লিচুর গুটি বের হবে। তখন কীটনাশকসহ বিভিন্ন ভিটামিন স্প্রে করবে কৃষকরা। এছাড়াও লিচু মোটা করতে মাটিতে জৈব সার, হরমোনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন তারা। 

উপজেলার জয়নগর কারিগর এলাকার লিচু চাষি শামসুল আলম বলেন, এ বছর শহর থেকে চায়ের দোকানের পাশের  বাগানগুলোতে গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি এসেছে। লিচুচাষী এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবার লিচুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে লিচু চাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা লিচু থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

ঈশ্বরদী উপজেলার লিচু চাষিরা জানান, এ বছরে লিচুর মুকুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গ মুকুল বের হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এসব মুকুল ফুটতে শুরু করবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। 

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার জানান, ফাল্গুনের শুরুতে লিচুর মুকুল বের হতে শুরু করেছে। গতবছরের তুলনায় এ বছর লিচু ফলন বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি বছরই লিচু গাছে মুকুল আসার আগে ও পরে রোগ বালাই দমন ও পরিচর্যা সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। এবারও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সর্বক্ষণ পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন পাবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!