• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠদান নয়, সন্তান পরিচর্যায় ব্যস্ত শিক্ষিকারা


রংপুর প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৬, ২০১৬, ০৭:৪৪ পিএম
পাঠদান নয়, সন্তান পরিচর্যায় ব্যস্ত শিক্ষিকারা

রংপুর : রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তানদী বেষ্টিত গ্রামীণ জনপদের অবহেলিত চরাঞ্চলের এক সময়ের শিক্ষার বাতিঘর মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু সেই বাতিঘর এখন নিভু নিভু প্রায়। এখানে শিক্ষকতার মহান পেশার দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকাদের কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। যেখানে শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীরাদের মেধা বিকাশে পাঠদানে ব্যস্ত থাকবেন, সেখানে পুরো চিত্রইটাই যেন উল্টো। স্কুলে এসে শিক্ষিকারা নিজ সন্তানদের পরিচর্যায় সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন।

এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা যেমন পাঠগ্রহনে পিছিয়ে পড়ছেন, অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে দিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির আটজন শিক্ষকের সবাই নারী। সকলেরই রয়েছে ছোট শিশু সন্তান। নিজেদের শিশুদের পরিচর্যা করতে শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে সময় দেন খুবই কম। এমনকি অনেক সময় শিক্ষার্থীদের দিয়েও পরিচর্যা করানো হয়  শিশুদের। ক্লাস চলাকালীন ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুবর্নাকে দিয়ে নিজ সন্তানের সেবা নিতে দেখা যায় এক শিক্ষিকাকে। যদিও বিষয়টি ভয়ে এড়িয়ে গেছেন ওই শিক্ষার্থী।

স্থানীয় অভিভাবক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের সবাই নারী শিক্ষক হওয়ায় লেখাপড়ার মান একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষিকারা ক্লাস বাদ দিয়ে নিজের বাচ্চাকে আব্বু আম্মু করেই সময় পার করে দেন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে একাধিকবার পুরুষ শিক্ষকের জন্য বলা হলেও তিনি তা কর্ণপাত করেননি।

একই অভিযোগ অভিভাবক আবুল হোসেন, ফরহাদ হোসেন, আলম মিয়া, সাজুসহ আরো অনেকের। তারা চান সমস্যা সমাধানে আট জনের মধ্যে কমপক্ষে দুই থেকে তিনজন পুরুষ শিক্ষকের ব্যবস্থা হোক এখানে। এতে হয়তো বিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে বলেও মনে করেন তারা।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা বেবী আখতার বানু বলেন, শিক্ষিকারা বাচ্চা নিয়ে আসলেও কাজের লোক সঙ্গে আনেন। আর বদলির বিষয়টিতো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে। এসময় তিনি শিক্ষিকাদের ক্লাস ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের নিয়োগ বা বদলির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খলিলুর রহমান বলেন, কোন বিদ্যালয়ে পুরুষ-নারী শিক্ষক নিয়োগ বা বদলিতে কোন আনুপাতিক বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়া বদলির ক্ষেত্রে অনেক প্রতিকূল পরিবেশও কাজ করে। তবুও বিষয়টি আমরা দেখব।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম
 

Wordbridge School
Link copied!