• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘কোল্ড ইনজুরি’তে বোরো চারা, বিপাকে চাষী


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানুয়ারি ২১, ২০১৮, ০৫:০৬ পিএম
‘কোল্ড ইনজুরি’তে বোরো চারা, বিপাকে চাষী

কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত বীজতলা

ঠাকুরগাঁও: শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো চারা ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বোরো চাষীরা। গত ২ সপ্তাহ ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে চলমান শৈত্যপ্রবাহে জেলার ৫ উপজেলায় বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করে চারা শুকিয়ে যাচ্ছে।

অনেক বীজতলার বোরো চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই চাষীরা তাদের আবাদ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আবার অনেকে বোরো বীজতলায় হরেক রকমের পলিথিন ঢেকে দিয়ে কিংবা কীটনাশক স্প্রে করেও তেমন কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে জানান চাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি। এজন্য কৃষকরা ৪ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার অধিকাংশ বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

এজন্য কৃষকরা বীজতলায় পানি সেচ কিংবা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেন কেউ কেউ। যেসব বীজতলা ঢেকে রাখা হয়নি তার বেশির ভাগই হলুদ বর্ণ ধারণ করে। অনেক বীজতলার চারা পোড়া বা ঝলসানোর মতো হয়ে গেছে।

সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের মিলনপুর গ্রামের ফুরকান আলি বলেন, এবার দুই একর জমিতে বোরো আবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১০ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছি। কিন্তু দুই দফায় টানা ১০/১২ দিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঘন কুয়াশায় বীজতলার সমস্ত চারা বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কৃষি উপ- সহকারীদের পরামর্শ মোতাবেক চেষ্টা করেও বীজতলা ভালো রাখতে পারছি না। চারাগুলো দেখে মনে হচ্ছে আগুনের তাপে ঝলসে গেছে।

একই গ্রামের আরিফ হাসান বলেন, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো চাষের জন্য রেডি করেছি। কিন্তু উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ১০ শতক জমির বীজতলার বীজ জ্বলে গেছে। কৃষি অফিসারদের দেয়া পরামর্শও তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ খন্দকার মাওদুদুল ইসলাম বলেন, দুই দফার তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে জেলার কিছু কিছু বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের ফিল্ড সুপারভাইজারদের তৎপর থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বোরো বীজতলা বাঁচাতে কৃষকদের করণীয় শীর্ষক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আক্রান্ত বীজতলায় প্রতিদিন ভোরে পানি পরিবর্তন করতে হবে। চারার আগা থেকে শিশির ফেলে দিতে হবে। রাতে বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। পোড়া বা ঝলসানো রোগে আক্রান্ত বীজতলায় প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি লিটার আজো অক্সিস্ট্রবিন বা পাইরাকোস্ট্রবিন জাতীয় ছত্রাক নাশক মিশিয়ে বীজতলায় দুপুরে স্প্রে করা যেতে পারে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!