• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
গাবতলীর সংঘর্ষ

ধর্মঘটে নাশকতার মামলায় ৭ শ্রমিক রিমান্ডে


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২, ২০১৭, ০৭:৪৬ পিএম
ধর্মঘটে নাশকতার মামলায় ৭ শ্রমিক রিমান্ডে
তিন মামলায় আসামি ১২শ’
চালক শাহিনুরের মৃত্যু শটগানের গুলিতে

ঢাকা: রাজধানীর গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে নাশকতার অভিযোগের মামলায় ৭ পরিবহন শ্রমিকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবির রাজ শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পরিবহন শ্রমিক রফিকুল, হাসানুর, রবিন, সোহেল, ফজলে রাব্বি, আলামিন ও এনামুল। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর দারুস সালাম থানা এসআই যোবায়ের আলম আসামীদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের শিবালয়ে শালজানা গ্রামে ‘কাগজের ফুল’ ছবির শুটিং স্পট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ঢাকা আরিচা মহাসড়কে জোকা এলাকায় মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় নিহত তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরসহ ৫ জন। আহত হন আরও ৩ জন। ওই মামলায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের আদালত ড্রাইভার জামিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।

ওই রায়ের প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকরা অবরোধের ডাক দিলে গত ১ মার্চ গাবতলীর তিন রাস্তা মোড়ে আসামীরা টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। একটি মোটরসাইকেল পোড়ায় এবং পুলিশের এপিসি গাড়ির ক্ষতিসাধন করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। ওই ঘটনায় দারুসসালাম থানার এসআই বিশ্বজিত পাল বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

বুধবার রাতে একই ঘটনায় আরো দুটি মামলা দায়ের করেন দারুস সালাম থানার এসআই জোবায়ের ও ফেরদৌসি নামের এক নারী। তিন মামলায় ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে ১২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দারুস সালাম থানার এসআই বিশ্বজিৎ পাল জানান, পুলিশের করা একটি মামলায় সরকারি কাজে বাধা, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে বিশেষ ক্ষমতা আইনে। অন্যদিকে ফেরদৌসির করা তৃতীয় মামলায় তার ছেলেকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি জানান, মামলায় যে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে এদের মধ্যে কোনো পরিবহন নেতার নাম নেই। সবাই আন্দোলনকারী (শ্রমিক)।  

গত মঙ্গলবার ও বুধবারের সংঘর্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় মঙ্গলবার রাতে গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পরিবহন শ্রমিকরা। চলতে থাকে পরদিন বুধবার দুপুর পর্যন্ত। গত বুধবার সকালে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শটগানের গুলিতে আহত হন বৈশাখী পরিবহনের বাস চালক শাহিনুর। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে  চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি।

এদিকে, ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সংঘর্ষে নিহত বাসচালক শাহিনুরের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। শটগানের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশটি ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, শটগানের গুলিতেই শাহিনুর মারা গেছে। তার শরীরে ছোট ছোট বুলেট ছিল। অসংখ্য দাগে ভরা, অনেকটা ছররা গুলির মতো। ময়নাতদন্ত শেষে তারা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছেন।

এ সময় মর্গে নিহতের স্বজনদের দেখা যায়নি। পরে পুলিশের প্রহরায় মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পশ্চিম বালিঘাটায় পাঠানো হয়েছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!