• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে বিএসইসি কমিশনার যা বললেন


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১, ২০২২, ০৯:১০ এএম
নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে বিএসইসি কমিশনার যা বললেন

ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গত ২ কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার ও রোববার) শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স কমেছে ২৭২ পয়েন্ট। যার জন্য রাশিয়া- ইউক্রেনের যুদ্ধ ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে সময় বেধেঁ দেওয়াকে কারন উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারে যুদ্ধের জন্য সূচক পতন হওয়া যৌক্তিক না।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিলকুশাস্থ হোটেল পূর্বাণীতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে ‘পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির প্রভাব’ শীর্ষক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবু আহমেদ, সাবেক কমিশনার আরিফ খান, অধ্যাপক মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএমের শাহ মোহা আহসান হাবীব ও সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।

গত ২ দিন শেয়ারবাজার অযৌক্তিক পতনের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও তার সঙ্গে বাংলাদেশের সর্ম্পক্য খুবই কম। তাই আমাদের অর্থনীতিতে কম প্রভাব পড়বে। ফলে গত ২ দুই দিনে যে পরিমাণ সূচক কমেছে, তা ঠিক না।

অন্যদিকে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তা পুরোপুরি ঠিক না বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে ২০১৫ সালে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরে নিয়মিত তা সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান কমিশন ৭ম বারের মতো সময় বাড়িয়ে তা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করেছে। যা শেয়ারবাজারের স্বার্থে আরও বাড়ানো হবে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

বিনিয়োগকারীদেরকে আশ্বস্ত করে শেখ সামসুদ্দিন বলেন, শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়, এমন কোন সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে না। সবার আগে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাই নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের ব্যবধানে অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। তার সঙ্গে এই খাত তাল মিলিয়ে চলেছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি, সুশাসন ও খেলাপি ঋণে বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়কালীন শেয়ারবাজার এখন অনেক এগিয়েছে। একসময় ব্যাংক ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কথা চিন্তা করা না গেলেও এখন শেয়ারবাজার বিকল্প হয়ে দাড়িঁয়েছে।

বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান বলেন, না বুঝে ও লোভের কারনে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী লোকসান করে এবং করতে বাধ্য। হয়তো এভাবে বিনিয়োগ করে ১ বছর মুনাফা করা যায়। কিন্তু সেই মুনাফা বাসায় নিয়ে যাওয়া যায় না। কারন লোভের বশবর্তী হয়ে আবারও ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করে। যা একসময় লোকসানে নিয়ে যায়। এই বাজারে লোভ ও ভয় নিয়ে মুনাফা করা সম্ভব না।
যারা বুঝে না, তাদেরকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ফান্ড ম্যানেজারদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন আরিফ খান।

তিনি বলেন, এই খাতের অ্যাসেট ম্যানেজারদের নিয়ে সমালোচনা থাকলেও সবাই খারাপ না। টুকটাক সব খাতেই খারাপ লোকজন আছে। তাই ভালো ফান্ড ম্যানেজারদের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি। এক্ষেত্রে ফান্ড ম্যানেজারদের বিগত কয়েক বছরের ইতিহাস দেখে বাছাই করা যেতে পারে।

আরিফ খান বলেন, কোন কোন রেগুলেটর মনে করে শেয়ারবাজার তাদের অংশ না। এই ধারনা ঠিক না। এটা পাল্টাতে হবে। কারন মানিটরি পলিসির সঙ্গে শেয়ারবাজার সরাসরি জড়িত। অনেকে ভুল করে মূল্যসূচক কমে গেলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দোষারোপ করে বলে জানান তিনি। অথচ সূচক নিয়ন্ত্রণ করা রেগুলেটরের কাজ না। এই সূচক উঠানামা করাটাও স্বাভাবিক। টানা উঠা স্বাভাবিক না।

তিনি বলেন, এই বাজারে ১৫টা কোম্পানি গত ৭ বছরে গড়ে প্রতি বছর ২০% এর বেশি রিটার্ন দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কেউ বিনিয়োগ করতে চায় না। কারন ওইসব শেয়ার নিয়মিত বাড়ে না। সবাই দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন চায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!