• ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

এনবিআরে ‘বরখাস্ত আতঙ্ক’ বাড়ছে প্রশাসনিক অস্থিরতা


নিজস্ব প্রতিবেদক:  জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৭:৫২ পিএম
এনবিআরে ‘বরখাস্ত আতঙ্ক’ বাড়ছে প্রশাসনিক অস্থিরতা

ঢাকা : এনবিআরে আন্দোলন স্থগিত হলেও কমছে না প্রশাসনিক অস্থিরতা। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ও বদলির আদেশপত্র প্রকাশ্যে ছেঁড়ার পর গত চারদিনে অন্তত ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত, শীর্ষ চার কর্মকর্তাকে অবসর এবং একাধিক কর্মকর্তাকে বদলি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

চলমান সংকটে কখন কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এখন সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরও এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

জানা গেছে, প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের ছবি, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কার্যক্রম, মোবাইল লোকেশন এবং গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

গত ১২ মে সরকার এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে সংস্থাটি ভেঙে দুটি বিভাগ (রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা) করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করে। এরপর সেই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

মে মাসের মাঝামাঝি সরকারের পক্ষ থেকে অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাস দিলে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়। তবে স্বার্থ সংরক্ষণে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বা অপসারণ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান কর্মকর্তারা। এসময় এনবিআর চেয়ারম্যানকে কার্যালয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাকে অসহযোগিতার ঘোষণা দেন সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

গত ২২ জুন কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করে আদেশ জারি করে এনবিআর। তাদের ২৪ জুন বা তার আগে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়। তবে সেই বদলি আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ২৪ জুন এনবিআর ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আদেশের চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানায় ঐক্য পরিষদ। ২৯ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় ‘কোনো সাজা দেওয়া হবে না’ বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন কর্মকর্তারা।

আন্দোলন প্রত্যাহারের পরে এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় গত মঙ্গল ও বুধবার যথাক্রমে ১৪ ও ৯ জন; সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং হোয়াটসঅ্যাপে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কটূক্তি করায় এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া বৃহৎ করদাতা ইউনিটের একজন গাড়িচালককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুদক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একের পর এক কর্মকর্তাদের বরখাস্তের পর আতঙ্ক কাজ করছে রাজস্ব প্রশাসনে। অনেকেই স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। সারাক্ষণই তো বদলি-বরখাস্ত আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। কাজ করবো কী। এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমা চেয়েও লাভ হয়নি। হাজার হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। কতজনকে শাস্তি দেওয়া হবে? সব মিলিয়ে ভীতিকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এএইচ/পিএস

Wordbridge School
Link copied!