• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ফের মূলধন জোগানের উদ্যোগ


অর্থনৈতিক রিপোর্ট ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮, ০৩:৫৩ পিএম
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ফের মূলধন জোগানের উদ্যোগ

ঢাকা : রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ফের মূলধন জোগানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ব্যাংকগুলো প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এর মধ্যে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি ৭ হাজার ৬২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের ঘাটতি ৮ হাজার ২৮২ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছে। সচিবালয়ে ডাকা ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউনুসুর রহমান। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসিক ব্যাংক ও গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে থাকতে এরই মধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

করের টাকা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে মূলধনের জোগান দেওয়া হয়ে থাকে। এর বিরোধিতা করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, ব্যাংকগুলো পরিচালনায় অদক্ষতা, অনিয়ম, দুর্নীতি করে প্রতিবছর লোকসান গুনবে আর তাদেরকে সরকার মূলধন জোগান দেবে, তা হতে পারে না। ব্যাংকগুলো যাতে নিজেরা ভালো করে এবং সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে, তার জন্য লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ চলতে দেওয়া হবে। ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য বেঁধে দিতে হবে।’  

তিনি আরো বলেন, ‘বার বার মূলধন জোগান দিলে ব্যাংকগুলো কোনোদিন নিজেদের উন্নতির চেষ্টা করবে না। তাই মূলধন এভাবে না দিয়ে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বিশদ পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।’

নিয়মানুসারে মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ হচ্ছে ব্যাংক পরিচালনায় ঝুঁকি মোকাবেলার সামর্থ্য সীমিত না থাকা। ব্যাংকগুলোর সম্পদ (ঋণ) বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বাড়ে। ঋণের মান অনুযায়ী ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ নির্ণয় করা হয়। যে ব্যাংকের গুণগত মানসম্পন্ন ঋণ বেশি তার ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ কম। খারাপ ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো যেন পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সঙ্কটে না পড়ে এজন্য আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। যে ব্যাংকের মূলধন যত কম তার সঙ্কট মোকাবেলার সামর্থ্যও তত কম। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যাসেল-৩ অনুসারে মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এর পাশাপাশি অনাক্সিক্ষতভাবে কোনো ঝুঁকির ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় আরো ১ দশমিক ২৫ শতাংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে সোনালী ব্যাংকের। এই ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ঘাটতি ১ হাজার ২৭৩ কোটি।  রুপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৬৯০ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক প্রথমবারের মতো ঘাটতিতে এসেছে।

সরকার-মালিকানাধীন বিশেষায়িত খাতের কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। আর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ঘাটতি ৭৪২ কোটি। তবে সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও অগ্রণী ব্যাংকে কোনো মূলধন ঘাটতি নেই। সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি তৈরি হলে বাজেট থেকে তার জোগান দিতে হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!